জীবনের উদেশ্য খুঁজে বেড়াই? পার্ট ৫

জীবনের উদেশ্য খুঁজে বেড়াই? পার্ট ৫

জীবনটা কিসের মত?

উত্তর খুজতে গিয়ে গুগলে সার্চ দিলাম
“Life is like……” দিয়ে

বাকিটা ইতিহাস
মোট ৮ বিলিয়ন উত্তর আসলো, মাত্র!!!

নানা মুনির নানা মত,

কেউ বলছেন, লাইফ একটি বই, কিছু চেপ্টার দুঃখ, কিছু চেপ্টার সুখ আর কিছু চেপ্টার রমাঞ্ছকর, পাতা না উলটান পর্যন্ত জানা যায় না আগে কি আছে

কেউ বলছে লাইফ হল একটি নাছোড়বান্দা শিক্ষক

কেউ বলছে লাইফ হল পরবত স্রিঙ্গ, যা চড়তে কঠিন তবে চড়ে গেলে সুন্দর দৃশ্য

কেউ কেউ আবার বলছেন লাইফটা হল এক কাপ গরম চা, একটা পিয়ানও, একটা সারকাস, একটা পাজল, অথবা নাকি ৭ গিয়ারের এক রেসিং সাইকেল, যার সপ্তম গিয়ার কখনই ইউস করা হয় না!

তাই প্রশ্ন,

আপনার কাছে লাইফ টা কি?

একটু চিন্তা করুন,

প্রশ্নটা ইম্পরট্যান্ট, কারন আপনার অবচেতন মন লাইফ কে যেই সংজ্ঞা দিবে সেটাই হবে আপানর ভিত্তি।
এই অবেক্ত সংজ্ঞাই আপনাকে ড্রাইভ করছে, নিরনয় করছে আপনার প্রায়রিটি, আপনার মূল্যবোধ।

যেমন
আপনার কাছে লাইফের ডেফিনেশন যদি পার্টি হয়ে থাকে তাহলে আপনারও প্রাওরিটি হবে ফান। যদি ডেফিনেশন একটা রেইস হয়ে থাকে তাহলে আপনার প্রাওরিটি হবে স্পিড আর যদি একটি গেইম হয় তাহলে আপনার প্রাওরিটি হবে শুধু উইনিনিং

এত সংজ্ঞার ভিরে সঠিক সংজ্ঞাটা যে কি হবে, বোধহয় তিনিই দিতে পারেন যিনি আমাদের বানিয়েছেন
তাই তাঁর অভিধান ঘাটা শুরু করলাম, পেলাম মোট তিনটি সংজ্ঞা!

প্রথম সংজ্ঞা

লাইফ হল একটা টেস্ট [১]

বিভিন্ন এক্সামপ্ল দিয়েছেন ,

যেমন

ইব্রাহিম কে টেস্ট করা হয়েছে আগুনে ফেলে এবং ছেলেকে কুরবানির ইন্সট্রাকশন দিয়ে, ইয়াকুব কে টেস্ট করা হয়েছে অন্ধত দিয়ে, ইয়ুসুফ কে টেস্ট করা হয়েছে টেমটেশন দিয়ে, আইয়ুব কে টেস্ট করা হয়েছে রোগ দিয়ে, দাউদ কে টেস্ট করা হয়েছে জটিল কেস দিয়ে!

আমরাও প্রতি নিয়ত কোন না কোন টেস্টের সম্মক্ষিন হচ্ছি, এবং সেই টেস্টে কি ভাবে রেস্পন্ড করছি তা তিনি নোট রাখছেন।

বিশেষ করে, আমরা যখন তাঁর প্রেসেন্স ফিল না করি অথবা মনে করি তিনি আমাদের দুয়া শুনছেন না ঠিক সেই মুহূর্ত গুলো!প্রতিটি মুহুরতে তিনি আমাদের রেস্পন্স অবসারভ করছেন

তাঁর টেস্ট গুলো কি রকম হতে পারে তা আমরা কিছুটা আঁচ করতে পারি, বিষয়গুলো তিনিই জানিয়ে দিয়েছেন, যেমন ডিরেক্টলি বলেছেন

আমাদেরকে অবশ্যই টেস্ট করা হবে ভয়, ক্ষুধা, মাল ও জানের ক্ষতি ও ফল-ফসলের ক্ষতি দিয়ে [২] আর টেস্ট করা হবে টাকা পয়সা ও সন্তানাদি দিয়ে [৩]

আবার ইনডিরেক্টলি বলেছেন

আমাদের টেস্ট করা হবে কিছু মেজর চেঞ্জ দিয়ে, বিলম্বিত প্রতিশ্রুতির মাধমে, মাঝে মাঝে ইম্পসিবল প্রবলেম দিয়ে, উত্তরবিহিন দুয়া দিয়ে, অযাচিত ইন্সাল্ট দিয়ে অথবা অনাকাঙ্খিত শোক দিয়ে

ইন্টেরেস্টিংলি, এই টেস্ট শব্দের ক্ষেত্রে তিনি আরবিতে ফা-তা-না শব্দটি ব্যাবহার করেছেন। আরবরা এই শব্দিটি সাধারণত স্বর্ণ থেকে ময়লা দূর করার ক্ষেত্রে ব্যাবহার করে থাকে, মানে, তিনি বলেই ফেললেন আমরা তাঁর কাছে স্বর্ণের মতই মূল্যবান!

খেয়াল করুন,

যখন ইয়ুনুস অধইরজ হয়ে রাগ করে রওনা দিলেন, তখনই তিনি তাঁকে মাছের পেটের এক্সপেরিএন্স টেস্ট করালেন, বিষয়টা শাস্তি ছিল না বরং তাঁর ডেভেলপমেন্ট জন্য একটা ছোট্ট টেস্ট ছিল

তবে সুখবর হল,

তিনি চান আমারা যেন এই টেস্ট গুলতে পাশ করি। তিনি প্রমিস করছেন যে তিনি কখনই এমন কোন টেস্ট চাপিয়ে দিবেন নে যা আমাদের সাদ্ধের বাইরে [৪]
আরও সুখবর হল যে আপনার কোন টেস্ট এর কষ্টই ব্রিথা যাবে না
সামান্য একটা কাটা ফুটার কষ্টের বিনিময়েও আপনার একাউন্টে রিওারড পয়েন্ট জমা হতে থাকবে [৫]

তাই বলছি,

লাইফকে একটা টেস্ট হিশেবে ট্রিট করুন, দেখবেন কোন কিছুই আর ভিত্তিহিন বা অমুলুক লাগছে না, প্রতিটি ঘটনাই ইম্পরটেন্ট, প্রতিটি দিনই অরথবহ এবং প্রতিটি মুহুরতই লাগবে ক্যারেক্টার ডেভেলপমেনট এর একেকটি অপ্পরটুনিটি!

এবার আসি দ্বিতীয় সংজ্ঞায়

লাইফ হল একটা টেম্পোরারি লোণ

পৃথিবীতে আমাদের সময়, এনারজি এবং রিসোর্স যা আছে সবই তাঁর [৬], আমাদের কেবল কিছু দিনের জন্য ধাঁর দেয়া হয়েছে।

এই ক্ষণিকের বিরতি পথে কোন কিছুই আমাদের না। আমরা চলে গেলে অন্য কাউকে এই সার্ভিস এঞ্জয় করতে দেয়া হবে। যে কোন মুহূর্তে তিনি তাঁর জিনিস ফেরত চাইতে পারেন এবং চাহিবা মাত্র আমরা দিতে বাধিত থাকিব

তবে যতদিন আমরা তা ব্যাবহার করব ততদিন আমাদের সেগুলোকে রেস্পন্সিবিলিটির সাথে ব্যাবহার করতে হবে

ভেকেশনে গেলে আমরা কি করি?

ঝক ঝকে মেঝে, বাহারি বাথ্রম আর তুলতুলে বিছানা এঞ্জয় করি। আমরা জানি এটা হোটেল কত্রিপক্ষের, তাই সব কিছুই যত্ন ও সাবধানে ব্যাবহার করি। জানি, জিনিস ভাঙ্গা গেলে কত্রিপক্ষকে জবাব্দিহি দিতে হবে।

বিআরটিসি বাস গুলা তে উঠলে দেখা যায় কি যাচ্ছে তা অবস্থা, এটিচুড হল, জিনিস তো সরকারের, নষ্ট হলে আমার কি?

অথচ আমাদের দৃষ্টি ভঙ্গিটা হওয়া উচিত ছিল, যেহেতু সব কিছুই তাঁর তাই প্রতিটি জিনিসের ক্ষেত্রে আমাদেরকে আরও এক্সট্রা কেয়ারিং হতে হবে

আমাদের প্রতিটি একশনের জন্যেও তাঁকে জবাদিহি দিতে হবে [৭]

আমাদের কে আশ্বাস দিতে হবে, যে আমরা রেস্পন্সিবল, আমাদের উপর তিনি ভরসা করতে পারেন
কারন

এই সামান্য পার্থিব প্রাচুর্য দিয়ে যদি আমাদেরকে দায়িত্ব অরপিত না করতে পারেন তাহলে জান্নাতের অসীম প্রাচুর্য দিয়ে আমাদের উপর ভরসা করবেন কি করে?

এবার আসি শেষ সংজ্ঞায়

লাইফ হল একটা টেম্পোরারি জার্নি [৮]

কুরআনে তিনি অনেক অনেক ভাবে বুঝুইয়েছেন যে এই লাইফ খুবি টেম্পোরারি, খুবি সংক্ষিপ্ত, বিদেশ ভুমির মত এক অস্থায়ি কেম্প। আমরা কেবল কয়েকদিনের টুরিস্ট মাত্র

দেশের বাইরে যারা থাকেন, অনেককেই দেখেছি দেশের মায়ায় দেশি পাসপোর্ট হাতছারা করেন না, দেশি সিটিজেনশিপ কেন্সেল করেন না। কাজ করার জন্য গ্রীন কার্ড ব্যাবহার করেন।
আমরাও এই পৃথিবীর গ্রীন কার্ড হলডার আর আমাদের পার্মানেন্ট সিটিযেনশিপ হল ওখানে, সেটাই আমাদের হোমল্যান্ড

আপনাকে যদি কোন দেশের এম্বেসসেডার হিসেবে পাঠানো হয়, তখন আপনি কি করেন?
সেই দেশের ভাসা শিখেন, তাদের কালচার শিখেন যাতে আপনার কাজ সহজ হয়। এখন আপনি যদি , সেই দেশের প্রেমে পরে নিজের মাতৃভুমিকে ভুলে সেই দেশকেই প্রাধান্য দেয়া স্টার্ট করেন তাহলে আপনি তো দেশদ্রহি হয়ে গেলেন! তাই না?

আমাদের কে তিনি এখানে এম্বেসসেডার হিসেবেই পাঠিয়েছেন [৯]

মনমুগ্ধকর এন্টারটেইন্মেন্ট আর বিলাশিতায় আমরা ভুলতে বসেছি যে এটা কোন ডিস্নিলেন্ড না, জাস্ট এমএসেডার হিসেবে একটা টেস্ট দিতে এসেছি

পৃথিবীটা যেহেতু আমাদের চিরস্তান নয় তাই তিনি প্রায় সময়ই আমাদের দুঃখ, দুরদশা দিয়ে মনে করিয়ে দেন যে এখানে সব চাহিদা পুরন হওয়ার নয়। প্রকৃত সুখ শান্তি আর ফ্যান্টাসি তো পরকালের জন্য উঠিয়ে রেখেছেন!

এখানে আমাদের সময় একদিন শেষ হয়ে যেতে পারে তবে তাঁর মানে এই নয় যে আমাদের গল্প এখানেই শেষ

মৃত্যু মানেই প্রস্থান নয়, এতো কেবল বাড়ির দিকে ফিরে চলা।

আমরা সবাই টুরিস্ট, ঘুরার পাশাপাশি কিছু সারটিফিকেশন টেস্ট দিতে এসেছি মাত্র
সময় হলে বাড়ি ফিরবো।

সেদিন যখন উঠান হবে সবাই সমস্বরে বলে উঠব:

“আরে! সেই টুরিস্ট স্পটে তোঁ মাত্র কয়েক ঘন্টাইত আমরা ছিলাম, এর জন্য এত এনেরজি, এত সময়, এত ব্যস্ততা!” [১০]

রেফেরেন্সঃ
[১] কুরআন ৬৭ঃ২
[২] কুরআন ২ঃ১৫৫
[৩] কুরআন ৬৪ঃ১৫
[৪] কুরআন ২ঃ:২৮৫
[৫] [ সহি বুখারি ৫৩১৭, সহি মুস্লিম ২৫৭২]
[৬] কুরআন ৪৩ঃ৮৫
[৭] তিরমিজি ২৪১৬
[৮] কুরআন ১৩ঃ২৬ ]
[৯] কুরআন২:৩০
[১০] কুরআন ১০ঃ৪৫

জীবনের উদেশ্য খুঁজে বেড়াই? পার্ট ৪

এই দিন দিন নয়, আরো দিন আছে
এই দিনেরে নিবে তোমরা সেই দিনেরো কাছে

কুদ্দুস বয়াতির এই বিক্ষাত গানটির আরেকটি ব্যাখ্যা কিন্তু আমরা দাড় করাতে পারি

এই জীবনই জীবন না আরো জীবন আছে
এ জীবনেরে নিবে তোমরা সেই জীবনেরো আছে

কত বছরই বা বাচব? বরজর ১০০ বছর? তারপর? সব কি শেষ?

আমাদের এই লাইফটা তোঁ ছোট্ট এক রেহারসেল স্তেজ, একটা প্রি স্কুল, একটা ডেমো লেভেল, বলতে পারেন নেক্সট লাইফে খেলার এক ওয়ারম আপ লেপ

এর পরপরই তো অনন্ত কাল শুরু

আমাদের প্রত্যেকের মধ্যেই এই অনন্ত কাল বেচে থাকার এক বাসনা আছে

বাসনাটি দোষের নয়, কারন এই বাসনা দেয়েই আমাদেরকে হার্ড ওয়াইরড করা হয়েছে

একদিন হয়ত শ্বাস প্রশ্বাস থেমে যাবে, তাঁর মানে এই নয় যে আপনি শেষ হয়ে গেলেন

খেলার লেভেলটা শুধু চেইঞ্জ হল

পরবর্তী লেভেলে আপনার স্ট্যাটাস কি হবে সেটা নিরনয় করবে এই লেভেলে আপানার সার্ভিস কুয়ালিটি বা পারফরমেন্স কেমন ছিল তাঁর উপর

অনেকেই আমরা ধারনা করি যেঁ পরবর্তী লেভেলে হয়ত দুটো অপশনই আছে, হয় জান্নাত নয়ত জাহান্নাম, অথচ জেনে অবাক হবেন এর মাঝেও কিন্তু আরেকটি অপশন আছে

আর তা হল আরাফ!

আরাফ হল তাদের জন্য যারা এতটাও ভালো কাজ করেনি যেঁ ফার্স্ট ক্লাস টিকেট পেয়ে যাবে আবার এতটাও খারাপ কাজ করেনি যেঁ ডিরেক্ট হাজতে যেতে হবে

ইকোনোমি ক্লাস বলেও একটা কথা আছে!

এই আরাফবাশি সবসময়ই আশায় থাকবে তাদের কে যেন কোন না কোন সময় ফ্রি আপগ্রেড করে দেয়া হয়

[বিষয়টি এতটাই ইম্পরটেন্ট যেঁ কুরআনে পুরো একটি সুরা এই নামে নামকরন হয়েছে] [বিস্তারিত আল-কুরান ৭:৪৬-৪৯]

স্রষ্টা বলেন

তোমরা যদি কৃতজ্ঞ এবং বিশ্বাসী হয়ে থাক তোমাদের কেন আমি শুধু শুধু শাস্তি দিবো , আমি তোঁ সবই জানি [কুরআন ৪:১৪৭]

তাঁর চাওয়া পাওয়া কিন্তু খুব বেশি না!

আপনাকে নিয়ে তাঁর অনেক প্লেন আছে,

এখানে যেমন আপনাকে নিয়ে একটি প্লেন আছে তেমনি পরের জিবনেও আপনাকে নিয়ে আরেকটি প্লেন আছে

লাইফটাইম অপরচুনিটি নয়, বলতে পারেন অপরচুনিটি বিয়ন্ড লাইফটাইম

আর এই অপরচুনিটি বিয়ন্ড লাইফটাইম পাওার গারান্টিড রেসিপি কিন্তু রাসুলুল্লাহ আউট করে দিয়ে গিয়েছেন!

“তোমরা যদি কোন বিষয়ে রাইট থাকা সত্ত্বেও ঝগড়া বা তর্ক থেকে বিরিত থাক তাহলে তোমাদের জন্য জান্নাতের নিম্ন দেশে একটা ঘর গেরান্টিড

আর যদি মজার ছলেও মিথ্যা না বলে থাক তাহলে জান্নাতের মিডেল লেয়ারে একটা ঘর গেরান্টিড

আর কেউ যদি উত্তম চরিত্রের হয়ে থাক তাহলে জান্নাতের হায়েসস্ট লেভেলে একটা ঘর গেরান্টিড!”

[সুনান আবু দাউদ ৪৮০০ এবং তিরমিজি ১৯৯৩]

তাই বলছি,

যেদিন বুঝবেন যে, এই লেভেল ছারাও আরও লেভেল আছে দেখবেন এই লেভেলে খেলার স্ত্রেটেজিটাই চেঞ্জ হয়ে যাবে, দৃষ্টিভঙ্গি চেঞ্জ হবে, চেঞ্জ হবে অন্যদের সাথে আচার ব্যাবহার।

দেখবেন অনেক গোল, অনেক এক্টিভিটি অনেক সমস্যা কেমন নগণ্য হয়ে গিয়েছে। আপনার প্রাইওরিটি চেঞ্জ হয়ে গিয়েছে- ট্রেন্ডি বা খেতি থেকে তখন মানুষের সাথে আপনার সম্পর্ক গভির করার নেশা প্রধান হয়ে গিয়েছে

জাস্ট এই একটা ইনফরমাশন পুরো খেলার স্ত্রেটেজিটাই চেঞ্জ করে দেয়,

“মৃত্যুই মানেই খেলা শেষ নয়, এটাতো সিমপ্লি একটি ট্রান্সিট পিরিওড”

মৃত্যুর বিষয়ে আল্লাহ বলেন

“প্রত্যেককেই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে” [কুরআন ৩:১৮৫]

লক্ষ করুন,

“তিনি কিন্তু বলেননি সবাইকেই মারা যেতে হবে”

বিশেষণ অ্যাড করেছেন

“স্বাদ গ্রহণ করতে হবে”

স্বাদ বলতেই বিষয়টি কেমন জানি পারসনাল হয়ে দাড়ায়

একেক জনের স্বাদ একেক রকমের!

অর্থাৎ

আপনার একশন নিরধারন করবে আপনি কোন ফ্লেভারের মৃত্যু উপভগ করবেন

রেসিপি আপনার হাতে, মাস্টার শেফও আপনি

আপনি নিরনয় করবেন আপনার মৃত্যুর স্বাদ কেমন হবে!

তাই, প্রশ্ন করুন

আজ যদি আপনার জীবনের শেষ দিন হয় তাহলে মৃত্যুর স্বাদটি কেমন হবে?

তিক্ত বা বিষাদ মোয়? নাকি সুইট অ্যান্ড টেইস্টি?

কি রকম হবে আপনার নেক্সট রউন্ড?

প্রিসন ক্লাস, ইকোনোমি ক্লাস? নাকি ফুরফুরে মাস্তি ওয়ালা ফার্স্ট ক্লাস যেখানে আপানর কাছের মানুষ গুলোর সাথে প্রিয় প্রিয় জায়গুলতে হেঙ্গউট করে বেরাবেন?

জীবনের উদেশ্য খুঁজে বেড়াই? পার্ট ৩

প্রথমেই কিছু সৃতি চারন..

সৃতি চারণ ১:

স্ট্যান্ডার্ড ফর, রমজানের দ্বিতীয় দিন, ক্লাসে একমাত্র আমিই সেদিন রোজা রাখিনি, নব্য ইসলাম দীক্ষিত টিচার এসে সবার সামনে দাঁড় করিয়ে সেই কি লজ্জা!

“সেম অন ইয়উ সামি, সেম অন ইয়উ”

খেয়াল আছে, লজ্জায় রাগে সেদিন সারা রাত ঘুমাতে পারিনি

প্রতিজ্ঞা করেছিলাম, কখনো রোজা না ভাঙ্গার এবং ধর্ম নিয়ে কাউকে খোঁচা না মারার

আজ অব্দি ইচ্ছাকৃত রোজা ভাঙ্গিনি বা ধর্ম নিয়ে খোঁচা দেই না!

এ ক্ষেত্রে ড্রাইভিং ফোর্স: রাগ এবং জিদ

সৃতি চারণ ২.

এ লেভেলের রেসাল্ট খারাপ হোল। বিশাল এক ধাক্কা খেলাম, আম্মা বেশ মন খারাপ করল, আমারও মন ভিশন খারাপ!

আবারো প্রতিজ্ঞাবদ্ধ, কখনো পরাশুনায় অনিহা দেখাব না।

পরবর্তীতে পড়ালিখা নিয়ে কখনো কথা শুনতে হয়নি

এ ক্ষেত্রে ড্রাইভিং ফোর্স: দুঃখ এবং কষ্ট

সৃতি চারণ ৩.

বিয়ের প্রোগ্রাম করবো, ধুম ধাম করে করবো, ভালো কোন জায়গাতেই করবো, না হলে লোকে কি বলবে? লোন নিলাম

ড্রাইভিং ফোর্স: লোকে কি বলবে

সৃতি চারণ ৪

প্রথম চাকরি, অনেক স্বপ্ন, কিছু করে দেখানোর স্পিরিট, সেই স্পিরিট ফুটো হোল কলিগদের বুল্লিং এর কারনে। সেই বিভিশিকাময় দিন গুলো, প্রতিটি দিন আতঙ্কে থাকতাম, অজানা ভয়, না জানি আজ আবার কি বেজ্জতি হতে হয়?

এক্সত্রা এফরট ও এক্সট্রা আওওার কাজ শুরু করলাম।

সে সময় প্রতিজ্ঞা করেছিলাম, আমার কোন অধিনস্তকে এই বলিং এর স্বীকার হতে দিবো না, কোন নুতুন কলিগকে টনটিং করবো না, জানি না পারছি কিনা, তবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি

এক্সট্রা কাজের ড্রাইভিং ফোর্সঃ ভয়

সৃতি চারণ ৫

বাইক কিন্তেই হবে, মার ক্রেডিট কার্ড

নিউ গেজেট কিনতেই হবে, মার ক্রেডিট কার্ড

ইফতারে লা মেরিডিয়ানের বুফে খেতেই হবে, মার ক্রেডিট কার্ড

ড্রাইভিং ফোর্সঃ মনের খুয়াইশ

লোক দেখানোর বা মনের খুয়াইশ পিছে ছুটতে গিয়ে, বেতনের সিংহ ভাগই যেতে শুরু করল লোণের পিছে

হুশ ফিরল, আবারো প্রতিজ্ঞা করলাম, লোক দেখানো বা মনের খুয়াইশ আর নয়!

এক এক করে সব কটা কার্ড ফেরত দিলাম, সাথে পাহাড় পরিমান ব্যাংকের লোন [আরেক মিরাকেলের গল্প]

আজ আমি ঝারা হাত পা

=================================

আমাদের প্রত্যেকেরি সময় অসময়ে রাগ, দুঃখ, ভয়, লোক দেখানো বা মন ভুলান পাল্‌স আমাদেরকে ড্রাইভ করে। এবং এর মাধ্যমে বেশ অর্জনও আসে তবে খেয়াল করেছেন কি, সেই ফোর্স গুলোর এক্সপেরিএন্স কনটাই সুখকর ছিল না।

তবে এমন একটি ফোর্স আছে যা আমাদেরকে নেগেটিভ ইমশন ছারাই ড্রাইভ করার শক্তি রাখে, এনে দেয় প্রশান্তি আর আনন্দ

ছোট্ট এক্সামপ্ল দেই,

কখনো কি কাউকে কোন অকারন হেল্প করে দেখেছেন? যেমনঃ

কেউ রাস্তা পার হতে পারছে না, পার করে দিলেন

ভারি কিছু উঠাতে পারছে না, এগিয়ে গেলেন

কেউ ঋণ গ্রস্ত, একটু হেল্প করলেন

কেউ খুদার কথা বলতে পারছে না, গপনে চাল কিনে দিলেন

অফিসে রিপোর্ট করতে পারছে না, করে দিলেন

মেইল লিখতে পারছে না, লিখে দিলেন

বয়স্কেক কাউকে দেখে সিট ছেঁড়ে দিলেন

খেয়াল করে দেখুন, তাদের কৃতজ্ঞ চিত্ত আজ অব্দি আপনাকে নাড়া দিয়ে উঠে! ঠটের কিনারায় মনে অজান্তেই হাসি ফুটে উঠে।

লক্ষ করুন, প্রতিটি ঘটনাই কেমন সেলফ লেস

আর আপনার এই একেকটি সেলফ লেস সার্ভিস কিন্তু ছিল সাদাকা [সহি বুখারি ৬০২১]

প্রথম পর্বে বলেছিলাম এই সেলফ লেস সার্ভিস গুলোই হোল লাইফের অন্যতম পারপাস

এগুলো প্রাকৃতিক ভাবেই বিল্ট ইন, তাই আপনার ন্যাচারাল ফ্রিকুএন্সিতে তা রেসনেট করে

তাই কোন ভাবে যদি আপনার লাইফের ফচাস এই সারভিস পারপাস কেন্দ্রিক করে ফেলতে পারেন দেখবেন জীবনটি হটাত করেই পিসফুল হয়ে উঠেছে

এই সারভিস কেন্দ্রিক পারপাসটি খুব ইম্পরট্যান্ট

এটা ছাড়া জীবনটি এক গন্তব্য বিহিন যাত্রা, উদ্দেশ্য বিহিন পথ, ঘটনা বিহিন এক নাটক।

চলছে তোঁ চলছেই।

হতে পারে আপনার জীবনে অনেক বেস্ততা, ছুটছেন অবিরাম গতিতে

একটু প্রশ্ন করুন,

গতি মানেই কি এগিয়ে যাওয়া , গতি মানেই কি অগ্র-গতি?

সারভিস কেন্দ্রিক পারপাস থাকলে জীবনে অরথবহ হয়, সহজ হয়, ফকাসড হয়, মটিভেশন আসে আর সবথেকে ইম্পরট্যান্ট, আসে অনন্ত জিবন পারি দেয়ার আদম্ম শক্তি

এই জিবনেও যেমন প্রশান্তি বয়ে আনবে তেমনি পর কালেও শুফলতা ভোগ করবেন

রাসুলুল্লাহ জানিয়েছেন,

কেউ যদি তাঁর কোন বিশ্বাসী ভাইয়ের দুরদশা দূর করে তাহলে আল্লাহ হাশরের দিনে তাঁর দুরদশা দূর করে দিবেন।

যদি কারো কঠিন সময়ে দূর করতে সাহায্য করেন তাহলে আল্লাহ সেই দিনে আল্লাহ তাঁর সব হিসেব সহজ করে দিবেন

অন্য বিশ্বাসী ভাইয়ের যদি দোষ লুকিয়ে রাখে তাহলে আল্লাহ এখানে এবং ওখানে দুজাগাতেই আপনার দোষ লুকিয়ে দিবেন

মোট কথা আপনার ভাইয়ের পিছন সামলান আল্লাহ আপনার পিছন সামলে দিবে … [সহি মুস্লিম ২৬৯৯a]

মহাম্মাদ আলির খুব সুন্দর ভাবে বিষয়টি বলে গিয়েছে

“Service is the rent we pay for our room on this earth”

অর্থাৎ

পৃথিবীতে বাস করার বাড়ি ভাড়াটাই হল সারভিস

আর

আর এই সারভিস হল ইবাদাহ!

জীবনের উদেশ্য খুঁজে বেরাই? পার্ট ২

আপনি কোনো ভুল নন

ভুল করে পৃথিবীতে চলে আসেননি

আপনার মা বাবা হয়তো আপনাকে প্ল্যান করেননি কিন্তু আপনার স্রষ্টা ঠিকই প্ল্যান করে রেখেছিলেন অনেক অনেক আগে

আপনার মা আপনাকে ধারণ করার বহু আগেই তিনি আপনাকে ধারণ করে রেখেছিলেন।

ইনফেকট

আপনার বর্ণ, গোত্র, চুলের কালার, আপনার ন্যাচারাল ট্যালেন্ট, এমনকি আঙ্গুলের প্রিন্ট পর্যন্ত আগে থেকে প্লেন করা।

যেহেতু তিনি আপনাকে একটি উদ্দেশ্যে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন, তাঁর মানে তিনি এটাও প্লেন করে রেখেছেন যেঁ আপনি কবে কোথায় কখন কোন পরিস্থিতিতে কোন পরিবারে জন্ম নিবেন!

অর্থাৎ কার কার জেনেটিক কম্বিনেশন আপনি কেরি করবেন এবং সেই অনুসারে আপনার বাবা মাকেও তিনি ব্যাক ক্যাল্কুলেশনের মাধ্যমে জর করেছিলেন

কোন কিছুই তিনি চান্সের হাতে ছেঁড়ে দেন নি, প্রতিটি জিনিসই প্লেন মাফিক হচ্ছে

এই মুহূর্তে আপনি ভাগ্যের জোরে বা কপাল গুনে শ্বাস নিছছেন না, নিতে পারছেন কারণ পৃথিবীতে আপনার প্রয়োজনীয়তা এখনো ফুরিয়ে যায় নি

এই গোটা ইউনিভার্স সৃষ্টির কারনও কিন্তু আপনি, অর্থাৎ মানুবকুল

তাই কথা হচ্ছে উনি এতো কিছু করার পেইন কেন নিতে গেলেন?

জাস্ট মজার বা খেলার ছোলে?

উত্তর তিনিই জানিয়ে দিয়েছেন

“না! তিনি এসব খেলার ছলে বানাননি” [৪৪:৩৮]

তিনি আমাদের পাঠিয়েছেন একটা স্পেসিফিক কারনে আর তা হোল

“উনাকে সার্ভ করার জন্য” [কুরআন ৫১:৫৬]

এবং

তিনি আমাদের পাঠিয়েছেন যেন

“তিনি দেখতে পান আমরা কে কে এই সার্ভিস ডেলিভারিতে একে উপর কে ছাড়িয়ে যেতে পারি” [কুরআন ৬৭:২]

অর্থাৎ আপনাকে এমন ভাবে সার্ভিস ডেলিভারি দিতে হবে যাতে আপনি বেস্ট সার্ভিস প্রোভাইডার হতে পারেন এবং আপনার সার্ভিস পেয়ে আসে-পাশের সবাই যেন উপকৃত হন

তাহলেই পাবে সার্থকতা

তবে, এর মানে এই নয় যে, এখনই সব কিছু ছেড়ে ছুড়ে বৈরাগীর জীবন ধরতে হবে

কারণ স্রষ্টা নিজেই বলেছেন

তিনি পৃথিবীকে সাজিয়েছেন যেন আমারা একে এনজয় করতে পারি [কুরআন ৭:১০]

তাঁর মানে আবার এও নয় যে

জীবনটা শুধু ফুরতিময় হয়ে থাকবে।

অর্থাৎ আমাদের জীবনের নেক্সট গোলই হলো নেক্সট মার্ভেল মুভি অথবা নেক্সট প্রমোশন অথবা নেক্সট ওয়ার্ল্ড টুঁর

ব্যালান্স থাকতে হবে

হ্যা আপনার এই ছোট ছোট গোল গুলো বড় একটা প্রোজেক্ট এর ছোট ছোট মাইলস্টোন এর মত

বড় সেই প্রজেক্টটি হোল “প্রোজেক্ট জান্নাহ”

স্রষ্টা জানিয়েছেন, জান্নাহ হচ্ছে “ওসাম” অর্থাৎ অসাধারণ , যদি তিনি “অসাম” বলে থাকেন তাহলে একটু কল্পনা করুন সেটা কত “ওসাম”

তিনি আমাদের ভালোবাসেন [৮৫:১৪] তাইতো তিনি চান আমরা যেন এই “ওসাম” জায়গাটিতে চির জীবনের জন্য যেতে পারি, এঞ্জয় করতে পারি।

তিনি আমাদের কতটা ভালোবাসেন সেটা সেন্স করার কল্পনা শক্তি আমাদের নেই

তারপরেও ছোট্ট একটি উদহারণ দেই:

একবার এক মা তার সন্তানকে হন্য হয়ে খুজচ্ছিলেন, অনেকক্ষণ পর যখন খুজে পেলেন তখন তাকে বুকে জড়িয়ে ধরে আগলে রাখলেন,

দূর থেকে রাসূলুল্লাহ বলে উঠলেন,

তোমাদের কি মনে হয় এই মা তার এই শিশুকে কোনদিন আগুনে ছুড়ে ফেলতে পারে?

না রাসূলুল্লাহ!

তখন তিনি বললেন,

আমাদের স্রষ্টা আমাদেরকে ওই মায়ের থেকেও অনেক অনেক বেশি ভালোবাসেন [বুখারি ৫৯৯৯]

ইফেক্ট তিনি তো মাত্র ১% ভালোবাসা সমগ্র মানব, জীন ও পশুপাখির মদ্ধে ডিস্ট্রিবিউটে করে রেখেছেন আর এতেই আমাদের ভালোবাসা একে ওপরের জন্য উতলিয়ে পরে!

বাকি ৯৯% ভালোবাসা তো তিনি তার কাছে জমা রেখে দিয়েছেন যেন বিচার দিবসে তিনি তা দিয়ে আমাদের স্বাগত জানাতে পারেন [বুখারি ৬০০০]

তাই বলছি আমাদের লাইফের আসল গোল হোল “প্রোজেক্ট জান্নাহ”

সেটা এচিভ করতে হলে এনাফ “সার্ভিস পয়েন্ট” অরজন করুন

প্রোজেক্ট এচিভ হলে যেখানে মনের আনন্দে ঘুরে বেড়াব, বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিবেন, পার্টি দিবেন

আর তিনি তখন পরম মমতা নিয়ে আমাদের বাচ্চামি দেখে মুচকি হাসবেন যেমনটা হেসেছিলেন আমাদের মা আমাদের প্রথম হাঁটা দেখে!

জীবনের উদেশ্য খুঁজে বেড়াই? পার্ট ১

কখনো খেয়াল করেছেন?

কোনো গ্রূপ ছবি দেখলেই সবার আগে চোখ কাকে খোঁজে বেড়ায়? – নিজের ছবিকে…

কেউ বকা দিলে মন সবার আগে কোন প্রশ্নটি করে? – আমাকেই কেন সবাই বকাবকি করে?

কোনো অঘটন ঘটলে মস্তিক কোন বিষয়টি তুলে ধরে? -আমার সাথেই কেন সব সময় এমনটি হয়?

আমি, আমি, শুধু আমি, আর আমি

আমার ব্যথা, আমার শান্তি, আমার দুঃখ, আমার চাওয়া!

এই আমি আমি করতে করতে জীবনটা কেমন জানি আত্ম কেন্দ্রিক ও এক ঘেয়ে হয়ে যাচ্ছে

তাই প্রশ্ন করছি

জীবনের উদ্দেশ্য কি শুধু আমিতেই সীমিত? আমার উদ্দেশ কি শধুই আমি?

আমারতো মনে হয়, আমাদের এই অস্তিত্বের কারণ আমাদের পরিবার, ক্যারিয়ার অথবা এডভেঞ্চার ছাপিয়ে আরো মহৎ কিছুর জন্য

আমরা কেন এই পৃথিবীতে এসেছি? কি উদেশ্য নিয়ে এসেছি?

এই উত্তর খুঁজতে গিয়ে গাদা গাদা সেলফ হেল্প, ফিলোসফি, স্পিরিচুয়ালিটির বই এর পাতা শেষ করেছি

সব শেষে যেটা মনে হলো

প্রশ্ন গুলো কঠিন, অবচেতন মন তাই এই কঠিন প্রশ্ন শুনতে পছন্দ করে না, তাইতো আমরা সস্তা এনেরটাইনমেন্ট বুদ্ হয়ে থাকি

আর যারা সাহস করে এগিয়ে যাচ্ছে তারাও কেমন যেন এক ভুল পথে হাটছে,

ফিলোসোফাররা নিজেস্ব মতবাদ দিচ্ছেন এবং তাও সবই ধারণা ভিত্তিক, তাদেরও শুরু- ওই “আমি” থেকেই

আমি কি হতে চাই?

আমার জীবনের গোল কি?

স্বপ্ন দেখো

কিছু গোল সেট করো

বের করো তুমি কিসে ভালো

ডিসিপ্লিন হয়

মূল্য বোধ ঠিক করো

নিজের উপর বিশ্বাস রাখো

কখন হার মেন না

উপদেশ গুলো নিঃস্বন্দেহে ভালো, আমার নিজেরও বেশ কাজে এসেছে, দুনিয়ার ম্যাপ কাঠিতে হয়তো অনেকের চোখে সফলও হয়েছি

তবে, একটু ভেবে দেখুন,

জীবনের সফলতা আর জীবনের উদ্দেশ্য কিন্তু এক নাও হতে পারে

যত দিন উদ্দেশ পূর্ণ না হবে তোতদিন বাই ডিফল্ট একটা শূন্যতা গ্রাস করে রাখবে আর সেটা ভরাট করার জন্য মন সব সময় অস্থির হয়ে থাকবে। তাই সাধারণ সেলফ হেল্প বই থেকে আরো ডিপ কোনো প্রেসক্রিপশন দরকার!

একটি পার্টিকুলার টুল এর বেবহার জানতে হলে আমরা যেমন মেনুফেকচারার কে জিজ্ঞেস করতে হয়, তেমনি আমাদের বেবহার কি সেটা জানতে হলে আমাদের মেনুফেকচারার এর মেনুয়ালে ঘেটে দেখতে হবে.

স্রষ্টাই আমাদের এই পৃথিবীতে নিয়ে এসেছেন অতএব তিনিই জানবেন কি উদ্দেশে আমরা এসেছি।

মনের অস্থিরতার ওষুধ ও তিনি বাতলে দিয়েছেন

“বিশ্বাসীদের জন্য স্রষ্টার জিকিরই (তার প্রতি মগ্নতা, ভালোবাসা, কৃতজ্ঞতা, তাকে ঘিরে গভীর চিন্তা) একমাত্র অন্তরে প্রশান্তি এনে দিতে পারে [কুরআন ১৩:২৮]

তাই জীবনের উদ্দেশ্য কি সেটা জানতে হলে কোনো পপ সাইকোলজিস্ট বা সেলফ হেল্প গুরু কাছে নয় স্বয়ং মেনুফেকচারারের কাছেই যেতে হবে. কোনো বৈশিক উইজডম নয় দরকার ডাইরেক্ট স্বর্গীয় হস্তক্ষেপ

স্বর্গীয় মেনুয়ালে তিনি বলেছেন

“আমাদেরকে এক মাত্র তার সার্ভিস এর উদ্দেশেই সৃষ্টি করা হয়েছে” [কোরান ৫১:৫৬]

সেই সার্ভিস গুলো কি হতে পারে? বা তার কোয়ালিটি অফ সার্ভিসই বা কি হবে সেটাও তিনি বাতলে দিয়েছন

হ্যা তার প্রশংসা করা, তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করা তো আছেই, তা ছাড়াও, সার্ভিস এর উদহারণ হতে পারে,

তিনি অসুস্থ হলে তাকে দেখতে যাওয়া,

তার খিদে লাগলে মুখে খাবার তুলে দেয়া,

পিপাসা লাগলে পানি এগিয়ে দেয়া,

ঋণ থাকলে ঋণের বোঝা হালকা করে দেয়া

প্রশ্ন জাগে না? আরে স্রষ্টার আবার এসবের প্রয়োজন হয় নাকি?

ইনটারেস্তিংলি এক্সাক্টলি এই প্রশ্ন গুলোই কিন্তু তিনি হাশরে করবেন?

“আমি অসুস্থ ছিলাম, তুমি দেখতে এলে না কেন?

আমি ক্ষুদার্থ ছিলাম, তুমি খাইয়ে দিলে না কেন?

আমি পিপাসু ছিলাম, পিয়ে দিলে না কেন?

উত্তরও তিনিই দিয়েছেন,

অমুকে অসুস্থ ছিল? তাকে দেখতে গেলেই আমাকে দেখা হয়ে যেত

অমুকে তোমার কাছে খানা চেয়েছিলো, তাকে খাওয়ালেই আমাকে খাওয়ানো হতো

অমুকে তোমার কাছে পানি চেয়েছিলো, তাকে পান করলেই আমাকে পান করানো হতো! [সহি মুসলিম ২৫৬৯]

আমার বরাবরই মনে হয় আমরা একেকজন একেকটি টুল, আমাদেরকে কিছু স্পেসিফিক উদ্দেশ্যে বানানো হয়েছে এবং

বিভিন্ন সময়ে তিনি আমাদেরকে ব্যাবহার করিয়ে নিবেন।কাজ হবেই! আমরা না এগিয়ে আসলে হয়তো তিনি অন্য কাউকে দিয়ে কাজটা করিয়ে নিবেন [কুরআন ৪৭:৩৮] ।

যদি আমরা কাজে আসতে পারি তাহলে আমাদের সার্থকতা আর যদি না পারি সেটা আমাদের ব্যর্থতা।

মদ্য কথা,

অন্যের সেবাই তাঁর সেবা এবং তার সেবার স্ট্যান্ডার্ড এর এক্সক্যাম্পলও তিনি সেট করে দিয়েছেন। আমাদের রাসূলুল্লাহ!

আমাকে মানো, আমার রাসূলকে মানো [কোরান ২৪:৫৪ এবং ৪:৫৯]

নিয়শ্চই তোমাদের জন্য তোমাদের রাসূলের মদ্ধে একটি উত্তম এক্সাম্পল দেয়া আছে [৩৩:২১]

অর্থাৎ মেনুফেক্চারার মেনুয়েলে বলে দিয়েছেন,

“ইন্সট্রাকশন ফল করো এবং ট্রেইনারকেও ফলো করো”

শেষ কথা:

চারিদিকে এতো অস্থিরতা, এতো অন্যায়, এতো অবিচার! প্রশ্ন জাগে না? মরে গেলেই কি সব শেষ?

নাহ! হতে পারে না!

ইকুয়েশন কোনোভাবেই মিলে না, স্রষ্টা ছাড়া কোনো পেরামিটারই এই ইকুয়েশনে ফিট হচ্ছে না

সব কিছু চান্সের উপর ছেড়ে দেয়া যায় না,

তাই আমি কোন ধরণের টুল এবং কিভাবে নিজেকে স্রষ্টার সেবায় লাগাতি পারি? এই প্রশ্নের উত্তর খুজার জন্য জার্নি স্টার্ট করলাম।

প্রতি দিনই এই বিষয়ে কিছু আঁকাআঁকি করছি। সবই একান্ত বেক্তিগত মতামত, ভালো লাগলে গ্রহণ করবেন, না লাগলে এড়িয়ে যাবেন শুধু শুধু অযথা বাকদণ্ডে জড়াবেন না.

কারণ একজন ভালো টুল কখনো বাক দ্বন্দে জড়াতে পারে না

হাপিনেস হচ্ছে অন্যকে হেল্প করা

একদিন এক টিচার তাঁর স্টুডেন্টদের জন্য কিছু বেলুন নিয়ে ক্লাসে ঢুকলেন

ঢুকে প্রত্যেকের হাতে একটি করে বেলুন ধরিয়ে ফুলাতে বললেন

ফুলানো শেষে বেলুন গুলতে নিজ নিজ নাম লিখে ছেরে দিতে বললেন

ছেড়ে দিতেই তিনি বেলুন গুলো এপাশ অপাশ করে মিশিয়ে দিলেন

এখন তিনি সবাইকে ৫ মিনিট সময় দিয়ে বেলুন গুলো বের করতে বললেন

পুরো রুমে হই হুল্লা লেগে গেল

৫ মিনিট শেষ

সবাই হয়রান ও ক্লান্ত

কেউই নিজের নামওলা বেলুনটি খুঁজে পেলো না

টিচার এবার নতুন ইন্সট্রাকশন দিলেন

“বাচ্চারা! তোমরা তোমাদের সবচে কাছের বেলুনটি তুলে নিয়ে দেখ কার নাম, তারপর যার বেলুন তাকে দিয়ে দাও”

এবার রেসালট ভিন্ন

দু মিনিটেই সবাই নিজ নিজ বেলুন হাতে পেয়ে গেল

টিচার বললেন

এই বেলুন গুলো হচ্ছে আমাদের লাইফের হাপিনেসের মত
কেউ যদি নিজের হাপিনেস একা একাই খুজে বেরায় তাহলে তাকে দিন শেষে হয়রানই হতে হবে বরং প্রত্যেকে যদি প্রত্যেকের সাহায্যে এগিয়ে আসে, তবেই সবাই সবার হ্যাপিনেস পেয়ে যাবে

লেসনটি সিমপ্ল

“হাপিনেস হচ্ছে অন্যকে হেল্প করা”

এটাই কিন্তু আপনার স্রষ্টার আদেশ

“তোমরা মানুষের প্রতি সদয় হয় এবং তাদের জন্য ভালো কর ও সাহায্য কর। আল্লাহ এমন পোরউপকারিদের ভালবাসেন।”
[কুরআন ২ঃ১৯৫]

***
গল্পটি আমার নয়, নেটে দেখলাম ভালো লাগল নিজের মত
অনুবাদ করে দিলাম

কোথায় যাচ্ছি? কি হতে যাচ্ছে?

আগামী মাসে সিডরের মতো ভয়ঙ্কর ঘূর্ণি ঝড় আঘাত আনবে

২০০৭ এর মতো লক্ষ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে

মারা যাবে অগুনিত

এমন একটা খবর বুলেটিনে আসলে মনে হয় না আমরা খুব একটা বিচলিত হবো

কারণ এটা তো পুরান খবর

প্রতি বছরই এমন হয়

প্রতি বছরই আমরা টেকেল দেই

প্রতি বছরই ঘুরে দাঁড়াই , এবার দাঁড়াবো

এটাই বিশ্বাস।

এবার ভাবুন,

আপনি সহস্র বছর বেঁচে আছেন

প্রতি সহস্র বছরেই পেনডেমিক দেখেছেন

তাই আপনিও বিচলিত নন

কারণ আপনি আগেও দেখেছেন

মানুষ ঘুরে দাঁড়িয়েছে

এবারো জানেন যে মানুষ ঘুরে দাঁড়াবে

তবে এই বিশ্বাস থেকে বড় ভাবনা:

আপনি এই পরিস্তির পরবর্তী সময় কি ভাবে মোকাবেলা করবেন?

ইন্ডাস্ট্রিয়াল রেভোলুশন সাক্ষি

লক্ষ ফার্মের তাদের ব্যবসায় হারিয়েছিল

ইন্টারনেট বুম সাক্ষি

হাজার ব্যবসায় মুখ ধুবড়ে পরেছিল,

যারা মানিয়ে নিয়েছে তারা থ্রাইভ করেছে

যারা পারেনি, তারা হারিয়ে গিয়েছে

এই পেনডেমিকেও তাই হবে

যারা মানিয়ে নিতে পারবে, তারা বেঁচে যাবে

যারা পারবে না, তারা হারিয়ে যাবে

যুগ যুগ ধরে এটাই হয়ে এসেছে

আমার নিজের দেখা,

বড় ট্রেনিং সেন্টার গুলো আজ লোক ছাটাই করছে

আবার ছোট ছোট কিছু ট্রেনিং সেন্টার,

লাইভ ট্রেনিং সেশনের মাধ্যমে নিজেকে মানিয়ে নিয়েছে

তাই বলছি

নিজেকে প্রশ্ন করুন

নেক্সট কোন স্কিল আপনি এডাপ্ট করবেন পোস্ট পেনডেমিক সিচুয়েশন কে টেকেল দেয়ার জন্য?

নেক্সট কি চেঞ্জ ব্যবসায় আনবেন সারভাইভ করার জন্য?

অনেকেই বলছে এটা সৃষ্টার গজব

আমার অভিমত:

স্রষ্টার আমাদের ধ্বংস করার জন্য উঠে পড়েন লাগেনি

উনার যদি ধ্বংস করার ইচ্ছেই থাকতো

শুধু হুকুম দিলেই হতো

৭০০০০ হাজার কিলোমিটার বেগে ছতা সৌরজগত

ধ্বংস করা খুব সহজ অথবা

ডিমের খোসার মতো এক আবরণে দুনিয়া ভাসা ধ্বংস করাও খুব সহজ

উনি তা করছেন না

বরং যখনি খারাপ কিছু ঘটছে সেটা থেকে বেস্ট আউটকাম নিয়ে আসছেন

মনে রাখবেন

উনি সরারসরি হস্তক্ষেপ করেন না

উনি ন্যাচারাল লো তৈরী করেছেন সেটা হস্তক্ষেপের জন্য

আপনি যদি ১০ তালা বিল্ডিং থেকে লাফ দেন অথবা

যদি এক কাপ বিষ খেয়ে নেন

আপনি ভালো মানুষ না খারাপ মানুষ সেটা দেখবেন না

নেচার লো সেটা আপন গতিতে আপনার পরিণয় ঘটাবে

তবে হে আবারো বলছি

আমরা যেই ভুলই করি না কেন

যেই ভাইরাসই ছোড়াই না কেন

এটার কন্সিকুয়েন্স থাকবেই

তবে এর মধ্য দিয়েই উনি বেস্ট আউটকাম নিয়ে আসবে

উনার প্রতিশ্রুতি ভুল হতে পারে না

“কালো রাত্রির পরেই সূর্য হাসে, খারাপের পরপরই মঙ্গল আসে”

এই পরিস্তিতিও ঠিক হবেই

বলছি না সব আগের মতো হয়ে যাবে, পরিস্তিতি ডিফারেন্ট হবে

সো,

ডিসিশন নিন এই চেঞ্জে কি ভাবে নিজেকে গড়ে তুলবেন?

পারবেন তোঁ মানিয়ে নিতে নাকি কালের স্রতে নিজেকে বিলিয়ে দিবেন?

কুরআনের গঠন শৈলী: পার্ট ১

নতুন সিরিজ স্টার্ট করলাম।

ছোট বেলা থেকেই একটা প্রশ্ন প্রায়ই মনে হতো,

এই কোরানের টপিক গুলো এতো অগুছালো কেন?

কোনো নরমাল স্ট্রাকচার ফলো করে নি

একই কথা বার বার রিপিট হচ্ছে

এটা কি করে সম্ভব যে

যেই স্রষ্টা হাতের আঙুলের হাড্ডি গুলো পর্যন্ত এতো সুন্দর বিন্যাসে তৈরী করেছেন

তিনি তার শ্রেষ্ঠ বানী অগুছালো করে সাজাবেন?

রিসার্চ শুরু হল

আস্তে আস্তে জানা শুরু করলাম

এই কুরআন আসলে কোন রেনডোম টপিক দিয়ে সাজানো নয় বরং এর প্রতিটি টপিকই একটি নিপুন সুতয় বুঁনো

যেমনঃ

সুরা বাকারাহই দেখুন!

সুরা বাকারাতে মোট ৯ টি মেজর টপিক আছে

ক। বিশ্বাস বনাম অবিশ্বাস [১-২০]

খ। আল্লাহর সৃষ্টি এবং তাঁর জ্ঞান [২১-৩৯]

গ। ইস্রাইলবাসি কে আইন কানুন অরপন [৪০-১০৩]

ঘ। ইব্রাহিম (আঃ) কে পরিক্ষা করা হয়েছে [১০৪-১৪১]

ঙ। কিবলা পরিবরতন [১৪২-১৫২]

ঘ’।মুসলমানদের পরিক্ষা করা হবে [১৫৩-১৭৭]

গ’। মুসলমানদের আইন কানুন অরপন [১৭৮-২৫৩]

খ’। আল্লাহর সৃষ্টি এবং তাঁর জ্ঞান [২৫৪-২৮৪]

ক’। বিশ্বাস বনাম অবিশ্বাস [২৮৫-২৮৬]

খেয়াল করুন কি ভাবে

ক এবং ক’ এর সাথে মিল
খ এবং খ’ এর সাথে মিল
গ এবং গ’ এর সাথে মিল
ঘ এবং ঘ’ এর সাথে মিল
এবং মাজখানে ঙ

এই ধরনের নিরমান শৈলীকে রিং কমপসিশন বলে

মজার বিষয়,

বাকারাতে মোট ২৮৬ টি আয়াত আছে এবং কিবলা পরিবরতনের আয়াতটি এসেছে একদম মাঝখানে,

অর্থাৎ ১৪৩ নাম্বার আয়াতে!

এবং এই কিবলা পরিবরতনের সাথে সাথে টপিকের থিমও চেইনজ

আগে ছিল আগের রাসূলের আলোচনা পরে এলো বর্তমান রসূলের আলোচনা

শুধু তাই না,

এই ৯ টি টপিকের বিভিন্ন সাব পার্ট আছে এবং আগামিতে দেখবো কি করে সেগুলোও এই রিং কমপসিশন ফোল করে।

আরও দেখবো কি করে বিভিন্ন সুরা গুলোও এই নিপুন বাধনে জড়ান।

অবাক বিষয় হল,

এই সুরা সহ বিভিন্ন সুরা গুলো পার্ট বাই পার্বিট ভিন্ন সময়ে নাযিল হয়েছে!

তাই প্রশ্ন আসে না?

এটা কি করে সম্ভব?

কোন সত্তা এভাবে গুছিয়ে কথা বলতে পারে?

এক প্রাচীন জাপানীস গল্প……

একদা এক সামুরাই তাঁর স্ত্রীসহ নৌপথে যাচ্ছিলেন

সাগরে উঠলো বিশাল ঝড়

ফুলে ফেঁপে উঠলো বড় বড় ঢেউ

দূর দূরান্তে কোনো সীমানা নেই,

অজানা আতঙ্কে সামুরাইয়ের স্ত্রী শিউড়ে উঠলো

দৌড়ে গেল স্বামীর কাছে

গিয়ে দেখে

সামুরাই শাহেব প্রশান্ত চিত্তে বসে আছে

সমুদ্রের ভয়ঙ্কর সৌন্দর্য শান্ত ভাবে অবলোকন করছে

“তুমি কি?”

চিৎকার করে উঠলো স্ত্রী

“এই সময়ে এতো শান্ত হয়ে মানুষ বসে থাকে কি করে?”

“জীবনের জন্য কি কোন দয়া মায়া নেই তোমার?”

সামুরাই তখন শান্ত ভাবে, তার তরবারি বের করে স্ত্রীর গর্দানে রাখলেন।

স্ত্রী ফিক করে হেসে দিলেন

“তুমি হাসছ যে?”

“জীবনের জন্য কি কোন দয়া মায়া নেই তোমার?”

আমার এই নগ্ন তলওার কি তোমার ভিতরে কোন ভয় শাঞ্ছার করছে না?”

“না!”

“আমি জানি তুমি আমায় ভালোবাসো”

সামুরাই তখন হেসে উত্তরে দিলেন

“আমার জানোও সেই সত্তার হাতে যিনি আমায় ভালবাসেন!”

“আমি ভয় পাই কি করে?”

_________________________________________

ছোট গল্প,

তবে এর গভীরতা অনেক

আমায় বেশ নাড়া দিয়েছিল

“আমায় তিনি ভালোবাসেন”

এটা কোন ফ্যান্টাসি না, বাস্তবতা

এবং এই বাস্তবতাটি যেদিন বুঝতে পারব

সেদিন ভয়, শঙ্কা ও অনিশয়তার অনুভূতি গুলো ঐ সামুরাইএর মতই বিশ্বাসে টার্ন নিবে

টিকা:

কঠিন সময়ে তাঁর কয়েকটা কথা আমায় শান্ত থাকতে সাহায্য করে,

আশা করি আপনাদেরও কাজে আসবে

১.”… নিশ্চয় আল্লাহ মানুষের প্রতি করুণাশীল ও দয়াবান…”

[কুরআন ৯৪:৫-৬]

২. “..আল্লাহ তোমাদের জন্য যা সহজ তাই চান; তিনি তোমাদের উপর কোনো জটিলতা কামনা করেন না..”

[কুরআন ২:১৮৫]

৩. “হে আমার বান্দাগণ, তোমরা যারা নিজেদের উপর যুলুম করে

ফেলেছো, তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয় তিনি তোমাদের সমস্ত দোষ মাফ করতে পারেন। তিনি ক্ষমাশীল এবং পরম দয়ালু”

[কুরআন ৩৯:৫৩]

৪. “আল্লাহ কাউকে তার সাধ্যাতীত কাজের ভার দেন না, সে তাই পায় যা সে নিজে উপার্জন করে এবং তাই তার উপর বর্তায় যা সে করে থাকে” [কুরআন ২:২৮৬]

৫. “তোমাদের কাছে হয়তো কোন একটা বিষয় পছন্দসই নয়, অথচ তা তোমাদের জন্য কল্যাণকর। আর হয়তোবা কোন একটি বিষয় তোমাদের কাছে পছন্দনীয় অথচ তা তোমাদের জন্যে অকল্যাণকর।

বস্তুতঃ (কোনটা কল্যাণকর ও কোনটা অকল্যাণকর) আল্লাহই ভালো জানেন, তোমরা জান না।

[কুরআন ২:২১৬]

৬. আমি অবশ্যই তোমাদেরকে কিছুটা ভয়, ক্ষুধা, মাল ও জানের ক্ষতি ও ফল-ফসল বিনষ্টের মাধ্যমে পরীক্ষা করব। তবে ধৈর্য্যশীলদের সুসংবাদ দাও।

[কুরআন ২:১৫৫]

৭. “(জেনে রাখো) কষ্টের পরপরই স্বস্তি রয়েছে। নিশ্চয় কষ্টের পরপরই স্বস্তি রয়েছে।”

[কুরআন ৯৪:৫-৬]

৮. “হে বিশ্বাসীগন! তোমরা ধৈর্য্য ও নামাযের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্য্যশীলদের সাথে রয়েছেন।”

[কুরআন ২:১৫৩]

মেন্টাল মডেল পর্ব ৬

মেন্টাল মডেল: পার্ট ৬

ডিভোর্স পেপারটি সাইন করে জলিল সাহেব মাত্র বের হলেন

বুকের বা-পাশ টা কেমন যেন চিনচিন করে ব্যথা করছে

আনমনা ভাবেই গাড়িতে চড়লেন

ড্রাইভ করছেন আর বেকগ্রাউন্ডে মেন্টাল চেটার শুনছেন:

“১২ বছরের সুন্দর সম্পর্কটি এভাবেই শেষ হয়ে গেলো?”

“৫ বছরের ফুটফুটে ছেলেটি আমার”

“মা বাবাকে আর একসাথে দেখতে পাবে না”

“কি করে একা একা বড় হবে লক্ষিটি?”

“ভারী অন্যায় হয়ে গেলো ওর প্রতি”

“কি করে ছেলেটিকে এই খবরটি দিবো ?”

দারোয়ান গেট খুলতেই হটাৎ খেয়াল হলো, কখন যেন তিনি বাসায় ফিরে এসেছেন?

ইদানিং এটা প্রাই হচ্ছে,

পছন্দের একটা গান শুনছেন, অথচ খেয়ালি করেননি কখন গানটা শেষ হয়ে গেলো

ড্রাইভ করছেন, কিন্তু খেয়ালি করেননি কোনসময় টার্ন নেয়ার গলিটা পিছনে ফেলে এসেছেন

কারো সাথে পরিচয়ের বাদেই, কিছুতেই লোকটির নাম মনে করতে পারেন না

নিজেকে প্রশ্ন করলেন…কেন হচ্ছে এমন?

অনেক ভেবে চিন্তে ছেলের কাছে গিয়ে বসলেন

বললেন

“বাবা, আজ থেকে মা কিন্তু আরেকটা বাসায় থাকবেন”

“কেন?”

“মার কাজ আছে তো তাই”

অভিমানী সুরে ছেলের উত্তর

“ও আচ্ছা”

মুড্ চেঞ্জ করতে, জলিল সাহেব বললেন

“আচ্ছা বাবা বলতো বিষয়টিকে আমরা কি করে আরো পসিটিভলি দেখতে পারি?”

ছেলেটি খানিক চিন্তা করে চোখ মুখ উজ্জ্বল করে বললো

“আমমম.. আমার এখন দু-দুটো বাসা হয়ে গেলো বাবা!”

“দু বাসাতেই ডাবল ডাবল খেলনা হবে”

“ডাবল ডাবল ফ্রেন্ডস হবে”

“তাই না?”

“তাই তো?”

“আর আমি তোমার সাথে এখন আরো ঘন ঘন ট্রাভেল করতে পারবো”

অনেক কষ্টে চোখের পানি আটকিয়ে জলিল সাহেব বললেন

“এবার বোলো তো, তোমাকে হ্যাপি করার জন্য বাবা আর কি কি করতে পারে?”

ছেলেটি এবার উত্তর দিলো:

“এটা একটু বেশি বেশি করবে”

বাবা অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলেন

“কোনটা?”

“এই যে, আজ যেটা করলে”,

“আমার সাথে এসে চোখে চোখ রেখে কথা বললে, এইটা”

জলিল সাহেব চমকে গিয়ে রিয়েলাইস করলেন

আরে, তাইতো!,

“আমি তো যেন থেকেও নেই!”

“কোথায় সব সময় এমন হারিয়ে থাকি?”!!!
.
.
.

একটু ভেবে দেখুন তো, জলিল সাহেবের মতো আমরাও কি এমন আনমনে একটা জীবন পার করে দিচ্ছি না?

আপনি যখন আপনার ওয়াইফ অথবা কলিগ বা ফ্রেন্ডদের সাথে আছেন,

“আপনি কি আসলেই আছেন? নাকি মেন্টাল চেটারে ডুবে আছেন?”

আপনার এই মেন্টাল চেটারটি কিন্তু বেশ নাছোড় বান্দা

এই মেন্টাল চেটারটি হচ্ছে আপনার জীবনের বিরামহীন মনোলোগ যা সারাক্ষন সাব টাইটেল মেরেই যাচ্ছে।

ওকে না পারবেন চুপ করাতে আর না পারবেন শেষ করতে…

তবে তাকে বশ করা জন্য একটা টুল ব্যবহার করতে পারেন

আর তা হলো

“আওয়ার্নেস” বা “মাইন্ডফুলনেস”

আপনি যখন সচেতন হয়ে এই মেন্টাল চ্যাটার কে অব্জার্ভ করবেন, দেখবেন,

এটা একটা ধুয়ার মতো গায়েব হয়ে যাবে

মাইন্ডফুলনেস হচ্ছে একটা স্কিল, এমন একটা স্কিল যা প্রতিদিনের প্র্যাক্টিসের মাধ্যমে ইম্প্রোভ করা যায়

মাইন্ডফুলনেস ইম্প্রোভ করার জন্য “মেন্টাল মডেল পর্ব ৪ এ”, আমরা দুটো এক্সারসাইজ দেখিছিলাম,

আজ আরেকটি দিলাম

আজকের এক্সারসাইজ: (মাইন্ডফুল ইটিং)

“প্রতি দিন একটি অন্তত মিল মাইন্ডফুলি খান”

খাবার সময়, নো মাল্টিটাস্কিং, নো স্মার্টফোনে, নো ব্রাউসিং, নো ইমেইল চেকিং

জাস্ট খাওয়ায় ফোকাসড হন

ক্ষুদার্ত নেকড়ের মতো ঝাঁপিয়ে না পরে, খাওয়াটি আস্তে আস্তে গ্রহণ করুন

প্রতি লোকমা অন্তত ১০ বার করে চাবান

লক্ষ করুন খাবারের স্বাদটা কেমন

বিশ্বাস করুন, একটা ধাক্কার মতো লাগবে

একটা খাবারের যে এতো গুলো স্বাদ থাকতে পারে, তা হয়তো আপনার কল্পনারও বাইরে ছিল

খেতে খেতে অনুধাবন করুন,

যে খাওয়া আপনি খাচ্ছেন, তা কি ভাবে এনারজিতে কনভার্ট হচ্ছে?

কে দিচ্ছে এই খাবার, কিভাবে হচ্ছে এই মিরাকেল?

অনুভতি হবে যে,

“আরে! এই খাওয়াটাই তো একটা ইবাদত”

এই মাইনফুল ইটিং এ আপনার বেশ কিছু সাইড এফেক্টও আছে

যেমন

আপনার ফুড ইনটাকে সারপ্রাইসিং লেভেলে কমে যাবে

পেটে হাল্কা খিদে রেখে উঠে যেতে পারবেন

শরীর আরো হালকা ও হেলদি লাগবে

জীবনের প্রতি কৃতজ্ঞতাবোধ বেড়ে যাবে

তার থেকেও বড় কথা, রাসূলের একটা সুন্নত শুরু করার সওয়াব পেয়ে যেতে পারেন…

বি দ্রঃ
সুন্নতের কথা শুনে যদি আপনার সেক্যুলার সত্তা বিদ্রোহ করে উঠে, তাহলে না হয় ডায়েট এডভাইস হিসেবে “মাইন্ডফুল ইটিং” স্টার্ট করুন

Reference:

[1] তিনি তোমাদের জন্যে উৎপাদন করেন ফসল, যয়তুন, খেজুর, আঙ্গুর ও সর্বপ্রকার ফল। নিশ্চয় এতে চিন্তাশীলদের জন্যে নিদর্শন রয়েছে। [কোরান ১৬:১১]

[2] মানুষ তার খাদ্যের প্রতি লক্ষ্য করুক, কি করে আমি পানি বর্ষণ করেছি, এরপর ভূমিকে বিদীর্ণ করেছি, এরপর তাতে উৎপন্ন করেছি যা তোমাদের ও তোমাদের পশুদের জন্য শস্য শাক-সব্জি,আঙ্গুর, যয়তুন, খর্জূর, ফল ঘন উদ্যান এবং ঘাস । [কুরআন ৮০:২৪]