Mental Model Part 4

Part 1 Part 2 Part 3

আজকে সকালের মেন্টাল চেটারের একটা বিবরণ:

ভাবছি

“আবরার কে প্রথম কোলে নেয়ার অনুভূতি, ভাবতেই মনটা খুশিতে ভরে উঠলো

কিন্তু পরেক্ষনিই চিন্তা

ডেঙ্গুর যা ভয়াবহ অবস্থা, ছোট ছোট শিশু গুলো কি কষ্টই না পাচ্ছে

আমার আবরারের হলে কি হবে?

ভাবতেই আতঙ্কে গাটা হিম হয়ে গেলো

রাগটা গিয়ে পড়লো সরকারের উপর

কি করছে সরকার আমাদের পয়সা দিয়ে?

চোয়ালটা আপ্নে আপনি শক্ত হয়ে গেলো”

একটু খেয়াল করুন মাত্র ১০ সেকেন্ডে আমার এনার্জি হ্যাপিনেস থেকে কি করে রাগে টার্ন করলো

মনের এই রোলার কোস্টারে সাথে কম বেশি আমরা সবাই পরিচিত

পূর্বেই বলেছি,

আমাদের এই মেন্টাল চেটার কে টেকেল করতে হবে আওয়ারনেস দিয়ে

এই আওয়ারনেস এর বিষয়টা বোঝা জরুরি

আমাদের আওয়ারনেস যেদিকে যায়, সেদিকে আমাদের এনার্জিও ফ্লো হয়

আর আমাদের এনার্জি যেরূপ হবে, আমাদের রিয়ালিটিও সেরূপ ই হবে.

আমাদের মাইন্ড যদি একটা বিশাল স্পেস হয় এওয়ারনেস হচ্ছে সেই স্পেসে একটা লাইট বল

এই স্পেস জুড়ে অনেক এরিয়া আছে,

কিছু আছে হ্যাপি এরিয়া, কিছু দুঃখী এরিয়া, কিছু রাগি এরিয়া আবার কিছু ভালোবাসার এরিয়া

আমরা যখন এই লাইট বলটি হ্যাপি এরিয়াতে নিয়ে যাই তখন আমাদের হ্যাপি এরিয়া জ্বলে উঠে আর আমরা হ্যাপিনেস অনুভব করি

আমরা যখন লাইট বলটি রাগি এরিয়াতে নিয়ে যাই তখন আমরা রাগ অনুভব করি

আমরা চাইলেই কিন্তু এই লাইট বলটি কোথায় যাবে তা কন্ট্রোল করতে পারি

কিন্তু সেটা করার জন্য আমাদের দুটো শক্তি প্রয়োজন

একটা হচ্ছে কন্সেন্ট্রেশনের শক্তি

আরেকটা হচ্ছে ইচ্ছা শক্তি

আমরা অলরেডি জানি যে কনস্ট্রাটেন্ট্রশন হলো

“কোনো একটা নির্দিষ্ট বিষয়ে, নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত, মনোযোগটা ধরে রাখা

জানা সত্ত্বেও আমরা বেশিরভাগ মানুষই কিন্তু কন্সেন্ট্রে করতে স্ট্রাগল করি.

তার প্রধান কারন হলো

আমাদেরকে কখনো স্কুল কলেজে এ বিষয়ে শিখানোই হয় নি

ছোট বেলা থেকে শুধু শুনে এসেছি “পড়ায় কন্সেন্ট্রেট করো”, “কাজে কন্সেন্ট্রেটে করো” তাহলে জীবনে উন্নতি করবে

কিন্তু আফসোস আজ অব্দি কেউ শিখালো না কি ভাবে কন্সেন্ট্রেট করতে হয়

কন্সেন্ট্রেট করতে না পাড়ার আরেকটা কারন হলো

আমরা কেউ কন্সেন্ট্রেশন প্রেক্টিস করি না

আমরা যদি কোনো জিনিস প্রাক্টিশ না ই করি, তাহলে সেটাতে ভালো হব কি করে

ত প্র্যাকটিস এর বেস্ট উপায় কি?

প্র্যাকটিস এর বেস্ট উপায় হলো আমাদের ডেইলি কোনো একটা একটিভিটি তে কন্সেন্ট্রেশন এর প্র্যাক্টিস এপলাই করা

যেমন, আমাকে প্রতিদিন আমার কলিগদের সাথে কথা বলা হয়

যখন আমি তাদের সাথে কথা বলি, তখন তাদেরকে আমার আন ডিভিডেড এটেনশন দেয়ার চেষ্টা করি

এই সাধারণ প্রাক্টিসেই কিন্তু আমি দিনে ৫ থেকে ৬ ঘন্টার কন্সেন্ট্রেশন প্রেক্টিসে করে ফেলতে পারি,

আপনি যদি এটা কন্টিনিয়াসলি এপলাই করেন, কয়েক মাসের মধ্যেই আপনি কন্সেন্ট্রেশন বেশ ইম্প্রোভ করেছেন আর কয়েক বছর এপলাই করার পর পুরোদুস্তর মাস্টার বোনে যেতে পারেন

টেকনিক টা অবশ্য রাসূলুল্লাহ থেকে শিখা

যখনই কেউ তার সাথে কথা বলতে আসতেন উনি পুরপুরি মনোযোগ দিয়ে তার কথা শুনতেন, সে যেই হোক, যেই বয়সেরই হোক

গেমিংয়ের মতো, কন্সেন্ট্রেশনেও ডিফারেন্ট প্রাকটিস লেভেল আছে, কিছু সহজ লেভেল আর কিছু অ্যাডভান্সড লেভেল

আমার কাছে নামাজ হচ্ছে সেরকমই একটা অ্যাডভান্সড লেভেল

প্রতিদিন ৫ বার এই প্র্যাক্টিসে সেশন এর সুযোগ আসে

আপনার যদি কন্সেন্ট্রেশন ইম্প্রোভ করার ইচ্ছা থাকে তাহলে এর থেকে বেটার উপায় হতেই পারে না.

নামাজে কি করে কন্সেন্ট্রেশন বাড়াবে?

আপনি যখন নামাজে দাঁড়াবেন এবং আপনার মাইন্ড বিভিন্ন জায়গায় ছুটাছুটি করবে তখন আপনার ইচ্ছা শক্তি প্রয়োগ করে নিজেকে প্রশ্ন করুন

আচ্ছা এই মুহূর্তে আমি কার সামনে দাঁড়িয়েছি

আচ্ছা এই মুহূর্তে আমি কার সামনে মাথা নত করছি

আচ্ছা এই মুহূর্তে আমি কাকে সিজদা করছি

আচ্ছা এই মুহূর্তে আমি কার সামনে বসে আছি

এই সামান্য রিপিটেড একটিভিটি আপনার কন্সেন্ট্রেশন লেভেল গাণিতিক হরে বাড়াতে থাকবে

এবার আসা যাক আমাদের দ্বিতীয় শক্তিতে

“ইচ্ছা শক্তি”

আমাদের প্রত্যেকেরই বিভিন্ন লেভেলের ইচ্ছা শক্তি আছে

ইচ্ছা শক্তিটা অনেকটা পেশির মতো, যত বেশি এক্সারসাইজ করবেন তত বেশি বাড়বে

ইচ্ছা শক্তি বাড়ানোর মূল মন্ত্র হলো

“যা শুরু করেছেন তা শেষ করুন”

এখানেও আমরা আমাদের ডেইলি এক্টিভিটির মধ্যে তা ইমপ্লিমেন্ট করতে পারি

যেমন প্রতিদিন আমাদের ঘুম থেকে উঠা হয়

সো ঘুম থেকে উঠার প্রসেস কি ভাবে শেষ করতে পারি

প্রতিদিন বিছানাটা করতে পারি

যেই মুহূর্তে আপনি বিছানা করে ফেললেন তখন আপনি আপনার দিনের প্রথম কাজ তা সফলতার সাথে সম্পন্ন করে ফেললেন

আপনার দিনের এই ছোট্ট কাজটি আপনাকে একটা কনফিডেন্স দিবে আগত বাকি কাজ গুলো করার জন্য

এটা আপনাকে বিশ্বাস দিবে যে ছোট ছোট কাজ গুলো মেটার করে,

আপনি যদি ছোট কাজ গুলো করতে পারেন তাহলে আপনি বড় বড় কাজ গুলো ঠিক মতো করতে পারবেন

এরকম আরো কিছু ছোট ছোট কাজ গুলো হতে পারে

এই টেকনিক টাও রাসূলুল্লাহ থেকে নেয়া

এই ছোট ছোট কাজ গুলো আস্তে আস্তে আপনার অ্যাডভান্স এক্সারসাইজ গুলো সহজ করে দিবে

যেমন,

সুন্দরী হেটে যাচ্ছে, আপনি সহজেই দৃষ্টি নামিয়ে ফেলতে পারবেন

অথবা অন্যের কি খারাপ গুন্ আছে এই বিষয়ে রসালো আড্ডা জমেছে, আপনি সহজেই সেখান থেকে উঠে যেতে পারবেন

অথবা নামাজ পড়তে ইচ্ছে করছে না? আলসেমি লাগছে? ইচ্ছা শক্তির এক্সারসাইজ মনে করে পরে ফেলতে পারবেন

নামাজ হলো ইচ্ছা শক্তির একটা অ্যাডভান্সড এক্সারসাইজ

নামাজের ভিতরে আপনার মনোযোগ যখন বারবার ছুটে যাচ্ছে তখন ইচ্ছা শক্তির এক্সারসাইজ বারবার ইমপ্লিমেন্ট করতে পারে।

এ দুটো শক্তির প্র্যাক্টিসের মাধ্যমে ছয় মাস পর আপনার মদ্ধে প্রবল ইচ্ছা শক্তি এবং কন্সট্রেশন পাওয়ার দুটোই আছে

এখন আপনি চাইলেই যেকোনো কাজ ফুল এনার্জি দিয়ে কন্সেন্ট্রেট করতে পারবেন, মনোযোগ ছুড়ে গেলে ইচ্ছা শক্তি এপলাই করে আবার তা ফিরিয়ে আন্তে পারবেন

মনে রাখুন, আপনি যেখানে কন্সেন্ট্রেট করবেন সেখানে আপনার আওয়ারনেস থাকবে আর আপনার আওয়ারনেস যেখানে থাকবে সেখানে আপনার এনার্জি ফ্লো হবে এবং আপনার এনার্জি যেরূপ হবে আপনার রিয়ালিটিও সেরূপ ই হবে

Life is a Journey

1140-distracted-driving-tips-intro.imgcache.revc3146837140ff361f2e7651d97e0a010.web.900.513

বুবুর বাসায় যাচ্ছি

ড্রাইভ করছি

আঁকাবাঁকা রাস্তা

কখনো ডানে আবার কখনো বায়ে

কখনো সিগন্যাল আবার কখনো স্পিড ব্রেকার

এরকম ছোট খাটো বাধা আসছে

কিন্তু পেরিয়ে যাচ্ছি

এতো বাধা সত্ত্বেও মন কিন্তু খারাপ নেই

বরং স্বতঃস্ফূর্ত

কারণ কিছুক্ষনের মদ্ধেই বুবু দুলাভাইয়ের সাথে দেখা হবে…

জীবনটাও কি অনেকটা এরকম একটা জার্নির মতো নয়?

এ যেন অল্প কয়েক ঘন্টার জার্নি

কদিন আছি আর?

যখন জানবো যে

এক অসাধারণ ডেস্টিনেশনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি

তখনি কেবল জার্নিটা এনজয় করবো

আর মাত্র কয়েকটা দিন

তারপরই তো অনন্ত জীবন

সবার সাথে দেখা হবে

নেই কোনো ঝঞ্ঝাট

নেই কোনো চিন্তা

ঘুরে বেড়াবো দেশ বিদেশ

হবে নানা রকমের ফুড সাফারি

আর আড্ডা আর আড্ডা

তাহলে কেন এই অল্প কিছুদিনের আপস এন্ড ডাউনসে মন খারাপ করবো?

কেন?

আমরা কি তাহলে বিশ্বাস করি না!!!

তারা বলে

WE ONLY LIVE ONCE

অথচ আমরা বলি

WE ONLY DIE ONCE

Reference:

“যেদিন তাদের সমবেত করা হবে, সেদিন তাদের মনে হবে তারাতো
কেবল এই দুনিয়াতে মাত্র কয়েক ঘন্টাই ছিল..” [কোরআন ১০:৪৫]

“তিনি সেদিন আমাদের জিজ্ঞেস করবেন, তোমরা পৃথিবীতে কয় বছর ছিলে?

আমরা তখন বলব আমরাতো কেবল ১ দিন বা তার থেকেও কম সময় ছিলাম” [কোরআন ২৩:১১২-১১৩]