The Lost City

গল্পটা আমাদের অনেকেই জানা

ইব্রাহিম (আ:) এক সন্ধ্যা তারা দেখে বলে উঠলেন

এটাই মনে হয় আমার রব

কিন্তু যখন তা ডুবে গেলো তিনি বললেন

যা ডুবে যায় তা আমি পছন্দ করি না

তারপর যখন চাঁদ উঠল, বললেন

মনে হয় এটাই আমার রব

যখন সেটাও ডুবে গেলো, বললেন

নাহ এটাও আমার রব হতে পারে না

তারপর যখন সূর্য উঠলো, এর তেজস্ক্রিয় দেখে

তিনি বললেন

হয়তো এটাই আমার রব

আর সূর্যও যখন ডুবে গেলো, তিনি জায়নামাজের সেই বিক্ষাত দুআটি বলে উঠলেন

“ইন্নি ওজ্জাহাতু ওয়াজ হিয়া লিল্লাযী ফাতারস সামা ওয়া তি ওয়াল আর্দ হানিফা ওমা আনা মিনাল মুশরিকীন

অর্থ

“আমি এক মুখী হয়ে স্বীয় আনন ঐ সত্তার দিকে করেছি, যিনি নভোমন্ডল ও ভুমন্ডল সৃষ্টি করেছেন এবং নিশ্চই আমি মুশরেক নই”

[কুরআন ৬:৭৫-৭৯]

এ তো গেলো ঐতিহাসিক গল্প,

এখন আসি কিছু সমসাময়িক গল্পে

১৯ শতাব্দীর মাঝামাঝিতে স্যার লিওনার্ড উলেয় ইরাকের ইউফ্রেটিস নদীর তীরে উড় নামক একটা শহর এক্সকাভেট করেন।

সামেরিয়ান সভ্যতার প্রায় ৬০০০ বছর পুরানো এই শহরটিকেই প্রাচীন বাইবেলে ইব্রাহিম আ: এর শহর হিসেবে স্বীকৃতি দেয়

প্রায় ৫০ ফুট খননের পর সেখান থেকে ছোট বড় নানা সাইজের মূর্তি পাওয়া যায়,যা বাইবেল এবং কোরানে ক্লেম করা হয়েছে

সেই একই এক্সকাভেসনে থালা বাসন ছাড়াও প্রাচীন সামেরীয়ানদের অনেক হাতে লিখা ট্যাবলেটও পাওয়া যায়

এবং সেই ট্যাবলেট গুলো থেকে জানা যায়

সামেরীয়ানরা মূর্তি পুজোর পাশাপাশি সূর্য চন্দ্র ও সন্ধ্যা তারা/ শুক্র গ্রহেরও উপাসনা করতো

বেশ অবাক বিস্ময়ে ভাবছি

হাজার বছর লুকানো এই “শুক্র ফেক্ট” কোরআনে কাকতলীয় ভাবে এলো কোথা থেকে?

Leadership Lesson in Quran

“তারা কজনা দূর দূর বুকে অপেক্ষা করছে

বিশাল এক ভুল করে ফেলেছে

জেনারেলর মানা সত্বেও তারা তাদের পজিশন থেকে সরে যায়

তারা ছিল স্নাইপার

তাই তাদের এই একটা ভুলের কারণের যুদ্ধের মোর ঘুরে যায়

জিতা পজিশন থেকে তারা শোচনীয় ভাবে হেরে যায়.

শত্রূ পক্ষ পিছন থেকে এটাক করে বসে

জেনারেল ইনজুরড হয়

চোখের সামনে এক এক করে ৭০ জন সাথী ঝরে পরে”

দুঃখ ক্ষোভ আর হতাশা

“কেন করলাম আমরা? কেন! কেন!”

এখন ডাক পড়েছে

আশংকা, না জানি কোর্ট মার্শাল না হয়ে যায়!

.
.
.

উহুদ যুদ্ধের পরাজয়ের পরবর্তী ঘটনা

জেনারেল নিজের তাঁবুতে অবস্থামান

এক দিকে যুদ্ধ হারের লজ্জা, অন্যদিকে কাছের মানুষ গুলোকে হারানোর বেদনায় মন তিক্ত

পোস্ট ওয়ার মিটিং এ অপরাধীগুলোকে ডাকা হয়েছে

রওনা দিবে, ঠিক তখন আয়াত নাজিল হলো

আল্লাহ নিজ হাতে মুসলিম জাহানের জেনারেল কে এই মিটিং এর জন্য তৈরী করছেন

প্রিপারে করছেন কি করে ক্রাইসিস মোমেন্টে রিএক্ট করতে হয়. কারণ রিয়েল লিডারশীপের আসল চ্যালেঞ্জ হলো মানুষ যখন আপনার কথা ঠিক মতো না শুনে

আয়াতটি লিডারশীপের উপর এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়

এই একটা আয়াতের কন্সেপ্টের উপর ভিত্তি করে আমাজোনে কয়েক হাজার টাইটেল লিডারশীপে বেস্ট সেলার হয়েছে…

আল্লাহর এক বিশেষ বিশেষ বিশেষ রহমতে যে, আপনি তাদের জন্য এক অস্বাভাবিক রকমের কোমল হৃদয়এর [লানা] মানুষ হয়েছেন, আপনি যদি কর্কশ ভাষী হতেন [ফাজ] এবং রাগ পোষা হৃদয়ের হতেন তাহলে তারা আপনার কাছ থেকে ছিটকিয়ে [ইনফিডাড] দূরে চলে যেতো। কাজেই তাদের ক্ষমা [ফা ফু] করে দিন এবং তাদের জন্য মাগফেরাত কামনা করুন এবং ভবিষতে তাদের কাছ থেকে পরামর্শ গ্রহণ করুন। অতঃপর যখন কোন কাজের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে ফেলেন, তখন আল্লাহ উপর ভরসা করুন কারণ যারা আল্লাহর উপর ভরসা রাখে তাদের কে তিনি ভালোবাসেন [কুরআন ৩:১৫৯]

আমার প্রত্যেকেই কোনো না কোনো লিডারশিপ পসিশন হোল্ড করি, কেউ আমরা ম্যানেজার, কেউবা সুপারভাইসের, কেউ টীম লিড অথবা কেউ সিম্পলি একজন গৃহকর্তা

পজিশন যাই হোক আমাদের অধীনস্ত কেউ না কেউ ঠিকই আছে, সো এই টাইমলেস লেসন আমাদের সবার জন্যই কার্যকরী

আয়াতে ইন্সট্রাকশন শুরু করলেন

“আল্লাহর এক বিশেষ বিশেষ বিশেষ রহমত যে ,আপনি তাদের জন্য এক অস্বাভাবিক রকমের কোমল হৃদয়এর [লানা] মানুষ হয়েছেন”

এখানে লিন বা লানার শব্দটি বেশ গভীর।

যদিও এর শাব্দিক অর্থ হলো রুক্ষ বা কর্কশ হওয়া, তবে এটি আরবিতে অন্যের প্রশংসা করার ক্ষেত্রেও বেবহার হয়. শুধু তাই না, এর আরেকটা প্রয়োগ হলো, এম্পেথিক লিসেনিং এর ক্ষেত্রে। আরো মজার বিষয় হলো, আরবিতে নরম নরম সুমিষ্টি খেজুরকেও লিন ডাকা হয়

অর্থাৎ এই একটা শব্দে আল্লাহ বুঝিয়ে দিচ্ছেন,

হে রাসূল! আপনি যখন মিটিং এ যাবেন, তখন আপনার চেহারায় বা ভাষায় কোনো ভাবেই যেন কোনো রুক্ষতা প্রকাশ না পায়, শুধু তাই না, সেখানে তাদের বকাবকি তো দূরের কথা বরং তাদের ভালোদিক গুলো আগে হাইলাইট করুন!

মিটিং এ তাদেরকে জাজ না করে তাদের পসিশন থেকে নরম হয়ে আগে তাদের কথা শুনার চেষ্টা করুন

মানুষ ভুল করবেই, তাই বলে তারা এতদিন যা ভালো কাজ করে এসেছে তা একটা ভুলের কারণে তো আর নষ্ট হতে যেতে পারে না. তারা অলরেডি অনুতপ্ত, তারা অলরেডি লজ্জিত, তাই এই মন খারাপ করার দিনে তাদের দরকার একটা মোরাল বুস্ট।

কি ইনক্রেডিবল একটা লেসন!!!

এরপর আয়াত কন্টিনিউ হয়…..

“আপনি যদি কর্কশ ভাষী হতেন [ফাজ] এবং রাগ পুষে রাখা হৃদয়ের হতেন তাহলে তারা আপনার কাছ থেকে কবেই ছিটকিয়ে [ইনফিডাড] চলে যেতো”

ফাজ এর শাব্দিক অর্থ হলো কারো সাথে কর্কশ ভাবে কথা বলা, এর আরেকটা অর্থ হলো “কারো উপর কিছু স্প্ৰেয় করা”

অর্থাৎ কারো সাথে এমন ভাবে চিৎকার করা যাতে মুখের থুথুও ছিটিয়ে বের হয়ে যায়!

প্রায়ই দেখা যায়, আমরা বাবা-মা রা গলা ফাটিয়ে হুঙ্কার দিয়ে উঠি অথবা বস হিসেবে কাচের রুমে ডেকে অকথ্য ভাষায় চেঁচামেচি করি.

পরে অনুতপ্ত হয়ে খেলনা কিনে দেই, বুজে জড়িয়ে ধরি, ডেকে সরি বলি অথবা জাস্টিফাই করি

“বাবা আমি তো তোমার ভালোর জন্যই চিৎকার করেছি, আসলে আমি তোমায় ঠিকই ভালোবাসি”

অথবা

“আসলে ইয়ে মানে আমি একটু শর্ট টেম্পেরড তো তাই একটু ইগনোর করেন প্লিস”…

কিন্তু জানেন কি? আপনার এই সরির কোনো মূল্য নেই

যা হবার তা হয়ে গিয়েছে, ডেমেজ ইস ডান

ফাজ এর পর পর আল্লাহ যেই বিষয় তুলে ধরলেন তা হলো “রাগ পুষে রাখা হৃদয়”

কেউ কেউ আমরা চিৎকার করি না ঠিকই কিন্তু রাগটি ভিতরে ভিতরে পুষে রাখি, মাঝে মাঝে পণও করে বসি যে,

“মানুষটাকে জীবনেও মাফ করবো না”

মুখ দিয়ে হয়তো বলি “আমি তোমাকে মাফ করে দিয়েছি” কিন্তু ভিতর ভিতর ঠিকই জলে ছারখার হয়ে যাই

এই দুই জিনিসের কম্বিনেশনের এটিটিচুড যদি আপনার মদ্ধে থাকে তাহলে কি হবে জানে?

আল্লাহ কসম খেয়ে জানাচ্ছে

এমনটা যদি হয় তাহলে আমি কসম খেয়ে বলছি

সাহাবারা আপনার কাছ থেকে অবশ্যই অবশ্যই ছিটকিয়ে দূরে চলে যেত

কাচ যখন হাত থেকে পরে ভেঙে গিয়ে ছিটকিয়ে চারদিকে ছড়িয়ে পরে, এই বিষয়টাকে আরবিতে ইনফিদাদ বলে,

এক্সাক্টলি এই শব্দটিই এখানে সাহাবাদের ক্ষেত্রে বেবহার হয়েছে,

শব্দ চয়নের অর্থ হলো আমাদের মন হচ্ছে কাঁচের মতন

কাচ যখন ভেঙে যায় তা জোড়া লাগানো যাই না, যায় যদিও লাগে তা কখনই আগের অবস্থায় ফায়ার যায় না

মোদ্দ কথা আল্লাহ বলছেন

মিটিং এ যাও, শান্ত হয়ে, তাদের কথা মন দিয়ে শুনো, তাদের প্রশংসা করো, চিৎকার করবে না আর ভিতরে রাগও পুষে রাখবে না

আরো বললেন

“তাদের খুশি মনে ক্ষমা করে দাও [ফা ফু] আর তাদের জন্য দুআ করো.”

বাবা মা বা বৌ বাচ্চার জন্য তো দুআ করা সহজ, কিন্তু কেউ যখন আপনার মেজাজ খারাপ করবে তার জন্য দুয়া করতে কারেজ লাগে.

আল্লাহ আরো বললেন

“নেক্সট টাইম ইম্পরট্যান্ট মিটিং এ তাদের ডাকো, ডেকে তাদের সাথে পরামর্শ করো!”

একটু চিন্তা করে দেখেন, নেক্সট জুদ্ধের পৃ-মিটিং চলছে,

তখন তাদের কে ডেকে রাসূল জিজ্ঞেস করলেন

“একটা ফিডব্যাক দাও তো কি স্ট্রেটেজিতে আগানো যায়?”

একটু কি কল্পনা করতে পারছেন তাদের ফেসিয়াল এক্সপ্রেশন তা কেমন হয়েছিল!!

“জেনারেল আমার কাছে পরামর্শ চাচ্ছে! অথচ আগের বার কি ব্লান্ডারটাই না করেছিলাম!

এটা হচ্ছে আসল লিডারশিপ

ফাইনালি আল্লাহ এটা বলে আয়াত শেষ করলেন

“যখন তোমার পরামর্শের পর ডিসিশন নিবে তখন আল্লাহর উপর ভরসা রাখো”

মানে হলো?

এফোর্ট আমাদের হাতে কিন্তু রেসাল্ট উনার হাতে,

আমরা শুধু ট্রাই করতে পারি কিন্তু আমাদের জন্য কোনটা বেস্ট সেটা তিনিই জানেন

এখানে অহংকার বা বাহাদুরির কিছু নাই

কি অ্যামেজিং একটা লিডারশিপ লেসন

অরগানিজশন গুলো প্রতি বছর লাখ লাখ টাকা মোটিভেশনাল প্রোগ্রাম গুলোতে খরচ না করে জাস্ট এই একটা আয়াটের বিষয় বস্তু যদি প্রাকটিস করতো তাহলে তাদের প্রোডাক্টিভিটি সাকসেস রেশিও আকাশ চুম্বি হতো।

এটা কোনো স্পেকুলেশন না বিশ্বাস নয়

অগুনিত কোম্পানি এই এপ্প্রচ নিয়ে আকাশ চুম্বি সফলতা পেয়েছে

কোনো বেক্তিগত অভিমত নয় স্টাটিস্টিক্স দ্বারা প্রমাণিত

ফরচুন ৫০০ কোম্পানির লিডারশিপ পসিশনগুলো একটু এনালিজ করে দেখুন! কনফিউশন দূর হয়ে যাবে!

রেফারেন্স:

[1 ]Revive your heart by Nouman ali khan

[2] Leadership Lesson from the life of rasulullah by Mirza Baig

Vision 30,000 Year

হেলিকপ্টার ফ্লাইং লেসনের ফাইনাল সেশনটি হলো – ডাইভিং সেশন

ট্রেইনার আপনার হাতে কন্ট্রোল দিয়ে হেলিকপ্টারকে নোস্ ডাইভ করে ছেড়ে দিবে

প্রচন্ড গতিতে হেলিকপ্টার নামতে থাকবে এবং ওখান থেকেই আপনাকে এর নিয়ন্ত্রণ নিতে হবে

কন্ট্রোল ছাড়ার আগে অবশ্য সে আপনাকে বলে দিবে:-

“তোমার ফোকাস সেদিকেই রাখো যেদিকে তুমি যেতে চাও”

সিম্পলই হওয়ার কথা, মুভির মতো থ্রটলটি পুল করতে হবে এবং অমনি হেলিকপ্টারটি সোজা হয়ে যাবে

কিন্তু অলমোস্ট ১০০% ক্যান্ডিডেট প্রথমবার এই সিম্পল কাজটিতে করতে পারে না

ঘটনার অকিস্মিকতায় তারা

“তোমার ফোকাস সেদিকেই রাখো যেদিকে তুমি যেতে চাও”

কথাটি ভুলে যায়
তাইতো সবাই প্রথমবার ক্রাশিং জোনের দিকেই ফোকাস দিয়ে থাকে অরে মনের অজান্তেই সেদিকে এগিয়ে যায়

পাশ থেকে ইনস্ট্রাটর যতই বলুক না কেন “পুল ওভার” “পুল ওভার”

কোনো কিছুতেই কিছু হয় না

একদম লাস্ট মোমেন্টে ইনস্ট্রাটর বাধ্য হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে

আবারো বলে

“তোমার ফোকাস সেদিকেই রাখো যেদিকে তুমি যেতে চাও”

দ্বিতীয় বা তৃতীয় ট্রায়ালে গিয়ে বিষয়টি অন্যরা ধরতে পারে

আর তখন অবাক হয়ে দেখতে পায়

হেলিকপ্টারটি আস্তে আস্তে সেদিকে ঘুরে যাচ্ছে যেখানে তারা ফোকাস রেখেছে
.
.
.
খেয়াল আসলো, বিষয়টি টেস্ট করা দরকার

হাতের কাছে তো আর হেলিকপ্টার নেই তাই যাচাই করার জন্য বাইককেই বেছে নিলাম

বাইক নিয়ে বেরিয়ে গেলাম

বেশ স্পীডে বাইক নিয়ে আগাচ্ছি

এবার টেস্ট করার পালা

ফোকাস ১০ মিটার থেকে সরিয়ে ১০০ মিটার দূরে হালকা ১০ ডিগ্ৰী ডানে স্থির করলাম

বাস মেজিক স্টার্ট

বাইকটি আস্তে আস্তে অটোমেটিক ১০ ডিগ্রী ডানে মোর নেয়া স্টার্ট করলো

বিশ্বাস হলো না

এবার ফোকাস ১০ ডিগ্ৰী বায়ে স্থির করলাম

বাইক আবারো আস্তে আস্তে ১০ ডিগ্রী বায়ে মোর নেয়া স্টার্ট করলো

বিষয়টা একটা রোমাঞ্চকর গেমের মতো হয়ে গেলো

আসলে এটা কোনো ম্যাজিক নয়, এটা সিম্পলি আপনার সাব-কনশাস মাইন্ডের একটা প্রদর্শনী

সাব-কনশাস মাইন্ড হচ্ছে আপনার জীবনের অটোপাইলট

আপনি যেদিকে ফোকাস করবেন সে আপনাকে সেদিকেই পরিচালিত করবে

অনেকটা অজান্তেই

এ এক বিশাল শক্তি আর আপনি যদি একে ঠিক মতো কাজে লাগাতে পারেন তাহলে তো কোথায় নাই

কেরকম? এই ধরুন:

যেদিন থেকে প্রতিদিন সকালে বেলা নিজেকে তিন বছর পর কল্পনা করা স্টার্ট করলাম

সেদিন থেকে অদ্ভুত ভাবে জীবন অটোমেটিক মোর নেয়া স্টার্ট করলো

কথা বলার স্টাইল, খাওয়া দাওয়ার নিয়ম, চলা ফেরার ভঙ্গি অথবা চিনতা ভাবনার দৃষ্টিকোন সবই চেঞ্জ হওয়া স্টার্ট করলো

যেসব আইডিয়া আগে নোট বুকে #সামডে দিয়ে টুকা ছিল তা আস্তে আস্তে বাস্তব হওয়া স্টার্ট করলো

এই করতে করতে বিষয়টি নেক্সট লেভেলে নিয়ে গেলাম

কোরানের ভিশন এর সাথে জুড়ে দিলাম,

কল্পনার বেবতি তিন বছর থেকে ৩০ হাজারে বছর করলাম

কল্পনা করা স্টার্ট করলাম আজ থেকে ৩০ হাজার বছর পর জান্নাতে কি অবস্থায় থাকবো? কাদের সাথে হ্যাংআউট করবো?

বাস! জীবন আবারো মোর নেয়া স্টার্ট করলো..

এটিচুড নমনীয় হলো, ধৈর্য বেড়ে গেলে, সব থেকে বড় পাওয়া, লাইফ একদম স্ট্রেস ফ্রি হয়ে গেলো

কারণ অটল বিশ্বাস,

এই তো, আর মাত্র কয় দিন, তারপরই তো অনন্ত সুখের জীবন, শুধু পার্টি আর পার্টি ……

হেলিকপ্টার ট্রেইনারের সেই অমূল্য উপদেশ ট্রাই করে দেখতে পারেন, কে জানে হয়তো আপনিও সেই ম্যাজিক অনুভব করা স্টার্ট করবেন..

“তোমার ফোকাস সেদিকেই রাখবে যেদিকে তুমি যেতে চাও”

.
.
.

রেফারেন্স:
“যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে, তারাই সৃষ্টির সেরা। তাদের পালনকর্তার কাছে রয়েছে তাদের প্রতিদান চিরকাল বসবাসের জান্নাত, যার তলদেশে নির্ঝরিণী প্রবাহিত। তারা সেখানে থাকবে অনন্তকাল।
[সূরা বাঈয়েনা ৮ নং আয়াত]

Is God Loving or Angry?

বেশ কিছুদিন ধরেই আরবি ভাষা নিয়ে কাজ করছি

ভাষা নিয়ে কাজ করতে গিয়ে শিখলাম

প্রাগ ঐতিহাসিক আরবে আরবি ভাষায়, ভালোবাসাকে ১০টি শব্দে ভাগ করেছিলেন

একেকটি শব্দের ইনটেনসিটি লেভেল একেক রকম

সব থেকে নিচু লেভেলে ছিল ‘হাব’ যার অর্থ শুধু ভালোলাগা

আর সব থেকে তীব্রতম লেভেলটি হলো দশম লেভেল, একটি অনস্টেবলে এবং সুইসাইডাল লেভেল

এই লেভেলে আপনি কাউকে এতোটা ভালোবেসে ফেলেছেন যে আপনার সব কিছু লাটে উঠেছে,

আপনার আর বেঁচে থাকতে ইচ্ছা করছে না

এ ধরণের ভালোবাসা ক্ষতিকর এবং ভয়ঙ্কর

এই ক্ষতিকর লেভেলের ঠিক পূর্বের লেভেলটি হলো লেভেল ৯, যা একটা ম্যাজিক্যাল লেভেল

এই লেভেলটি এমন এক উদ্ভূত ভালোবাসার লেভেল

যে ভালোবাসায় কোনো কষ্ট নেই, কোন দুঃখ নেই

আপনার কোনো খিদা লাগবে না আবার কোনো কিছুতে ঘৃণাও হবে না

মানে, আপনি এতটাই তৃপ্ত, এতটাই ফুল যে অন্য কোনো ইমোশনের জায়গাই নেই

লেভেলটির নাম হচ্ছে ওয়ালাহ

এবং অবাক বিষয় হচ্ছে এই ওয়ালাহ শব্দ থেকেই ইলাহ শব্দের উৎপত্তি, যা থেকে আল্লাহ শব্দের গঠন

অর্থাৎ

তিনি সেই এমন এক সত্তা যার অর্থই হচ্ছে ভালোবাসা

তিনি এমন এক সত্তা যার কাছে আমাদের ভালোবাসার টানে ছুতে যাওয়ার কথা ছিল

অথচ

বাস্তব চিত্র ভিন্ন, ১৮০ ডিগ্রী উল্টো

আমরা দিন দিন সেই ইলাহ থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টায় মত্ত

কারণ একটাই,

ভয়

আমরা খুব সিস্টেমেটিকালি এই ইলাহের ব্র্যান্ড ইমেজের বারোটা বাজিয়ে দিয়েছি

ছোটবেলা থেকে আমাদের একটা মেন্ডেল মডেল ডেভেলপেড হয়ে গিয়েছে

আমাদের ডিফল্ট পসিশন এখন

আমাদের ইলাহ বদমেজাজি এবং আমরা মোটামোটি সবাই জাহান্নামী

মদ্য কথা

আল্লাহ ভীতিকর, তাকে ভয় করো

তো কি করে এই ১৮০ ডিগ্রী উল্টো মেন্টাল মডেল গঠন হলো?

“আল্লাহ ভীতিকর, তাকে ভয় করো” – এই ইনফরমেশনটি বার বার আমাদের মগজে ঢুকিয়ে দেয়া হচ্ছে

জুম্মা বলেন, তাফসীরের পাতায় বলেন অথবা ডাইরেক্ট অনুবাদ গুলোতে বলেন সবখানেই লিখা

আল্লাহ ভীতিকর, তাকে ভয় করো
আস্তে আস্তে এই ইমেজটা আমাদের মস্তিষ্কে ইমপ্রিন্ট হয়ে গিয়েছে

অথচ অবাক হবেন জেনে যে এবং এটা হয়েছে সামান্য একটি শব্দের ভুল ট্রান্সলেশনের কারণে

শব্দটি হচ্ছে তাকওয়া…..

কোরানে তাকওয়া শব্দিটি বিভিন্ন ফরম্যাটে ২৩২ বার এর ও বেশি বার এসেছে

যেমন

লা আল্লাকুম তাত্তাকুন [যেন তোমরা আল্লাহকে ভয় করো]

ওয়াত্তাকুল্লাহ [আল্লাহকে ভয় করো]

ফাত্তাকু [অতয়েব আল্লাহকে ভয় করো]

মুত্তাকিন [খোদা ভীরু হও]

জুম্মার খুৎবা বলেন অথবা যেকোনো ট্রান্সলেশন বলেন সবখানে ওই একই কথা,

ভয়! ভয়! ভয়!

আল্লাহ ভীতিকর, তাকে ভয় করো

অথচ ভাষা নিয়ে কাজ করতে গিয়ে শিখলাম

তাকওয়া শব্দের অর্থবোধক সংগা হলো “আওয়ারেনেস”

সহজ কোথায় চিন্তার ধুয়াজালে না ভেসে

অন্যমনস্ক না হয়ে

সর্ব অবস্থায় প্রেসেন্ট, আওয়ার আর মাইন্ডফুল থাকা হচ্ছে তাকওয়া

এখন লক্ষ করুন আমরা যদি এই ভয় শব্দটি সিম্পলি আওয়ারেনেস দ্বারা রিপ্লেসে করি তাহলে কি দাঁড়ায়

লা আল্লাকুম তাত্তাকুন [যাতে তোমরা আল্লাহর সম্পর্কে আওয়ার হতে পারো]

ওয়াত্তাকুল্লাহ [আল্লাহর সম্পর্কে আওয়ার হও]

ফাত্তাকুল্লাহ [অতয়েব আল্লাহর বিষয়ে আওয়ার হও]

মুত্তাকিন [যে সবসময় আওয়ার থাকে, সেরকম হও]

বুঝার পুরো ডাইমেনশনই চেঞ্জ হয়ে যায়….

ভয় এর জন্য কিন্তু কোরানে আলাদা আরেকটি একটা শব্দই আছে, তা হলো “খাউফ”

আমরা আমাদের সুবিধা আদায়ের জন্য কোরানের একটা ফ্রেকুয়েন্ট শব্দকে ভয় বানিয়ে ফেলেছি

তাই অবাক হওয়ার কিছুই নেই যে দিন দিন কেন আমরা ধর্ম থেকে দূরে সরে যাচ্ছি

কারণ মানুষের স্বভাবজাত স্বভাব হলো যা ভয়ঙ্কর তা এড়িয়ে চলো, যেমন সাপ অথবা বিচ্ছু

তাই যে মুহূর্তে আপনি স্ক্রিন থেকে ধর্মকে সরিয়ে দিবেন, সেই মুহূর্তে আপনি কিন্তু চিন্তা মুক্ত

“কি আর আছে জীবনে” মার্ক একটা ফিলোসফি এডপ্ট করবেন

কোনো দায়বদ্ধতা নেই অথবা বিচারদিবসের চিন্তা নেই

আর নেই বলেই কাউকে পিটিয়ে হত্যা করায় কিছু যায় আসে না

যায় আসে না দুর্নীতিতে এক নাম্বার হওয়াতে

অথবা যায় আসে না প্রতারণা, ধর্ষণ অথবা হত্যার মতো ঘৃণ্য অপরাধে

তবে আমি আশাবাদী

আস্তে আস্তে অনেকেই এই গোড়ামি থেকে বের হচ্ছে

দরকার একটা সঠিক ইনফমরাটিও ফ্লো

এবং যখন এই ইনফোমরাটিও চ্যানেল তা ঠিক করতে পারবো

আমরা ট্রান্সফার হতে পারবো

গড ফিয়ারিং জাতি থেকে গড লাভিং জাতিতে ….

Principle

আমাদের দ্বীনের মূল ভিত্তি হচ্ছে আদর্শ.

পুরো কোরান জুড়ে এই আদর্শ গুলো বার বার প্রেসেন্ট করা হয়েছে

ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকলই এই আদর্শ গুলোকে সমীহ করে, কারণ তারা ন্যাচারাল এবং তারা টাইমলেস

কিছু আদর্শের উদাহরণ হলো সততা, কৃতজ্ঞতা, নিরপেক্ষতা, বিশ্বস্ততা, মনুষত্ব ইত্যাদি

সমাজ ও জীবন বেবস্থার জন্য মানুষের মাঝে কোন কোন আদর্শ / গুণাবলীর প্রয়োজন এবং কোন গুণাবলী অর্জন করতে হবে বা বর্জন করতে হবে তা তিনি খুব চমৎকার ভাবে একটা ফর্মুলার মতো করে প্রেসেন্ট করেছেন

ফর্মুলাটা হলো তিনটি বাককাংশ

১. লা আল্লাকুম

২. ইউহিব্বু এবং

৩ মা’ য়া

যখনি তিনি একটা করণীয় অথবা বর্জনীয় ইন্সট্রাকশন দিয়েছেন তার ঠিক পরপরই উপরুক্ত একটা বাককাংশ এর সাথে একটা অদর্শ দিয়ে আয়াতটি পূর্ণ করেছেন

যেমন

তোমাদের উপর রোজা ফরয করা হয়েছে, “লা আল্লাকুম তাত্তাকুন” যাতে তোমরা সজাগ-সচেতন হয়ে উঠতে পারো

অথবা

তোমরা ন্যায় এর সাথে মীমাংসা করে দিবে এবং ইনছাফ করবে। “ইন্নাল্লাহা ইউহিব্বু মুকসিটিন” নিশ্চয় আল্লাহ ইনছাফকারীদেরকে ভালোবাসেন

অথবা

তোমরা পরস্পরে বিবাদে লিপ্ত হইও না, তোমরা ধৈর্য্যধারণ কর “ইন্নাল্লাহা মায়া সাবিরিন” নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্য্যশীলদের সাথেই আছেন

আদর্শ গুলো রেফারেন্স সহ তুলে ধরার চেষ্টা করলাম

কিছু কিছু ট্রান্সলেশন বেশ ঝামেলার, যার সঠিক শব্দ বাংলায় খুঁজে পাওয়া কঠিন, সে ক্ষেত্রে ভাব প্রকাশের জন্য ইংরাজীর সহায়তা নিলাম, আশা করি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন

বড় কাজ, কারো চোখে ভুল ধরা পড়লে সাথে সাথে ইনবক্স করবেন প্লিজ

তাশকুরুন
লা আল্লাকুম তাশকুরুন
যাতে তোমরা থ্যাংকফুল হও
2:52, 2:56, 2:185, 3:123, 5:6, 5:89, 8:26, 16:14, 16:78, 22:36, 28:73, 30:46, 35:12, 45:12

তুফলিহুন
লা আল্লাকুম তুফলিহুন
যাতে তোমরা সফলতা পেতে পারো
2:189, 3:130, 3:200, 5:35, 5:90, 5:100, 7:69, 8:45, 22:77, 24:31, 62:10

তাত্তাকুন
লা আল্লাকুম তাত্তাকুন
যাতে তোমরা মাইন্ডফুল হয়ে উঠতে পারো
2:21, 2:63, 2:179, 2:183, 2:219, 2:266, 6:153, 7:171

তাকিলুন
লা আল্লাকুম তাকিলুন
যাতে তোমরা মাথা খাটাতে পারো
2:73, 2:242, 6:151, 12:2, 24:61, 40:67, 43:3, 57:17

তুরহামুন
লা আল্লাকুম তুরহামুন
যাতে তোমরা দয়া প্রাপ্ত হতে পারো
3:132, 6:155, 7:63, 7:204, 24:56, 27:46, 36:45, 49:10

মুত্তাকিন
ইন্নাল্লাহা মায়া মুত্তাকিন
নিশ্চয় আল্লাহ মাইন্ডফুলদের সাথেই আছেন
2:194, 9:36, 9:123

ইন্নাল্লাহা ইউহিব্বুল মুত্তাকিন
নিশ্চয় আল্লাহ মাইন্ডফুলদের ভালোবাসেন
9:4, 9:7

আল্লাহু ইউহিব্বু মুত্তাকিন
আল্লাহ মাইন্ডফুলদের ভালোবাসেন
3:76

তাহতাদুন
লা আল্লাকুম তাহতাদুন
যাতে তোমরা সঠিক পথ খুঁজে পেতে পারো
2:53, 2:150, 3:103, 7:158, 16:15, 43:10

তাজাককারুন
লা আল্লাকুম তাজাককারুন
যাতে তোমরা স্মরণ করতে পারো
6:152, 7:57, 16:90, 24:1, 24:27, 51:49

সবিরিন
ইন্নাল্লাহা মায়া সবিরিন
নিশ্চয় আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথেই আছেন
2:153, 8:46, 16:128

আল্লাহু মায়া সবিরিন
আল্লাহ সবরকারীদের সাথেই আছেন
2:249, 8:66

আল্লাহু ইউহিব্বু সবিরিন
আল্লাহ সবরকারীদের ভালোবাসেন
3:146

মুফসিদিন
আল্লাহু লা ইউহিব্বু মুফসিদিন
আল্লাহ দাঙ্গাকারীদের ভালোবাসেন না
5:64, 57:23

ইন্নাল্লাহা লা ইউহিব্বুল মুফসিদিন
নিশ্চই আল্লাহ দাঙ্গাকারীদের ভালোবাসেন না
28:77

আল্লাহু লা ইউহিব্বু ফাসাদ
আল্লাহ দাঙ্গা ভালোবাসেন না
2:205

মুহসিনিন
আল্লাহু ইউহিব্বু মুহসিনিন
আল্লাহ সৎকর্মশীলদিগকেই ভালবাসেন
3:134, 3:148

আল্লাহু ইউহিব্বুল মুহসিনিন
আল্লাহ সৎকর্মশীলদিগকেই ভালবাসেন
5:93

জলিমিন
আল্লাহু লা ইউহিব্বু জলিমিন
আল্লাহ জুলুমকারীদের ভালোবাসেন না
3:57

ওআল্লাহু লা ইউহিব্বু জলিমিন
আল্লাহ জুলুমকারীদের ভালোবাসেন না
3:140

ইন্নাহু লা ইউহিব্বু জলিমিন
নিশ্চয় তিনি অত্যাচারীদেরকে ভালবাসেন না
42:40

কাফিরিন
আল্লাহু লা ইউহিব্বু কাফারিন আসিম
আল্লাহ পাপী অবিশ্বাসীদের ভালোবাসেন না
2:276

ইন্নাহু লা ইউহিব্বুল কাফিরিন
নিশ্চয় তিনি অবিশ্বাসীদের ভালবাসেন না
30:45

আল্লাহু লা ইউহিব্বু কাফিরিন
আল্লাহ অবিশ্বাসীদের ভালোবাসেন না
3:32

মুতাদিন
আল্লাহু লা ইয়ুহিব্বু মুতাদিন
আল্লাহ আইন ভঙ্গকারীদের ভালোবাসেন না
2:190

লা ইউহিব্বুল মুতাদিন
তিনি সীমা আইন ভঙ্গকারীদের ভালোবাসেন না
7:55

ইন্নাল্লাহা লা ইউহিব্বু মুতাদিন
নিশ্চয় আল্লাহ আইন ভঙ্গকারীদের ভালোবাসেন না
5:87

মুকসিতিন
ইন্নাল্লাহা ইউহিব্বুল মুকসিতিন
নিশ্চয় আল্লাহ ইনছাফকারীদেরকে ভালোবাসেন
5:42, 49:9, 60:8

খাউয়ানা
ইন্নাল্লাহা লা ইউহিব্বু খাওঅওানিন কাফুর
নিশ্চিই আল্লাহ কোন বিশ্বাসঘাতক অকৃতজ্ঞকে ভালোবাসেন না
22:38

ইন্নাল্লাহা লা ইউহিব্বু খাউয়ানা আসিম
নিশ্চয়ই আল্লাহ বিশ্বাসঘাতক পাপীকে ভালোবাসেন না
4:107

মুতাতোহহিরিন
ওয়াল্লাহু ইউহিব্বুল মুত্তাহহারিন
আর আল্লাহ পরিচ্ছন্ন লোকদের ভালবাসেন
9:108

ইন্নাল্লাহা ইউহিব্বুল মুতাতোহহিরিন
নিশ্চয়ই আল্লাহ পরিচ্ছন্ন বেক্তিকে ভালোবাসেন
2:222

মুস্রিফিন
লা ইউহিব্বুল মুস্রিফিন
তিনি অপব্যয়ীদেরকে ভালোবাসেন না
7:31

ইন্নাহু লা ইউহিব্বুল মুস্রিফিন
নিশ্চয় তিনি অপব্যয়ীদেরকে ভালোবাসেন না
6:141

মুখতালান ফাখুরান
ইন্নাল্লাহা লা ইউহিব্বুল মুখতালিন ফাখুর
নিশ্চয় আল্লাহ কোন দাম্ভিক অহংকারীকে ভালবাসেন না
31:18

ইন্নাল্লাহা লা ইউহিব্বু মুখতালান ফাখুরান
নিশ্চয় আল্লাহ কোন দাম্ভিক অহংকারীকে ভালবাসেন না
4:36

মুহসিনীন
ইন্নাল্লাহা ইউহিব্বুল মুহসিনীন
নিশ্চই আল্লাহ অনুগ্রকারীদের ভালোবাসেন
2:195, 5:13

ফারিহিন
ইন্নাল্লাহা লা ইউহিব্বুল ফারিহিন
নিশ্চিই আল্লাহ দাম্ভিকদেরকে ভালবাসেন না
28:76

মুস্তাকবিরিন
ইন্নাহু লা ইউহিব্বুল মুস্তাকবিরিন
নিশ্চিই তিনি অহংকারীদের ভালোবাসেন না
16:23

তাওয়াবিন
ইন্নাল্লাহা ইউহিব্বুল তাওয়াবিন
নিশ্চয়ই আল্লাহ তওবাকারীদের ভালোবাসেন
2:222

মুতাওক্কালীন
ইন্নাল্লাহা ইউহিব্বুল মুতাওক্কালীন
নিশ্চয়ই আল্লাহ তাওয়াক্কুল কারীদের ভালবাসেন
3:159

তুকিনুন
লা আল্লাকুম তুকিনুন
যাতে তোমরা নিশ্চিত একিন বিশ্বাস আনো
13:2

খ ইনিন
ইন্নাল্লাহু লা ইউহিব্বুল খ ইনিন
নিশ্চয়ই আল্লাহ ধোকাবাজ, প্রতারককে ভালোবাসেন না
8:58

তুসলিমুন
লা আল্লাকুম তুসলিমুন
যাতে তোমরা আত্নসমর্পণ কর
16:81

Coherence in Last 10 Sura

শেষ ১০টি সূরা কম বেশি আমরা সবাই জানি..

কিন্তু কখনো কি খেয়াল করেছেন, যে এই ১০ টি সূরার মাঝে একটি ইন্টারেষ্টিং প্যাটার্ন আছে?

প্যাটার্নটি স্টার্ট হয়েছে হজরত ইব্রাহিম আঃ এর একটি বিক্ষাত দুআকে ঘিরে,

“হে আমার রব, তুমি এ শহরকে হেফাজত করো এবং এর অধিবাসীদেরকে ফল ফলারি দ্বারা সমৃদ্ধ করো… [সূরা বাকারা ২:১২৬]

১. সূরা ফিল:

গল্প শুরু হস্তী বাহিনী দিয়ে, এই সূরাতে আল্লাহ মক্কাবাসীকে আব্রারহার হাতির বহর থেকে হেফাজত করলেন

২. সূরা কুরাইশ:

হস্তী বাহিনীর পরাজয়ের মাধ্যমে কুরাইশদের সম্মান অনেক বেড়ে গেলো, তাদের ব্যবসায আরো প্রসার হলো, নানা দিক থেকে নানা রকমের ফলফলারি আসা স্টার্ট করলো

৩. সূরা মাউন:

আল্লাহ কুরাইশবাসীদের বললেন, এই যে তোমাদের শান্তি ও ফলফলারি দিয়ে খুশি রেখেছি, এখন তো অন্তত তোমাদের পিতা ইব্রাহিমের লিগ্যাসি অনুসরণ করো!

সেটা কি ছিল?

“এক শ্রষ্টার ইবাদত এবং মানব সেবা”

সূরা মায়ুনের বিষয় বস্তু:

“স্রষ্টার উদ্দেশে নামাজ, নামাজে অলসতা না করা, লোক দেখানো কাজ না করা,

পাড়া প্রতিবেশী ও গরিব দুঃখীদের ধিক্কার না করা এবং
নিজের ব্যবহারিক সরঞ্জাম অন্যের সাথে শেয়ার করা”

৪. সূরা কাওসার:

কুরাইশরা হজরত ইব্রাহিমের লিগ্যাসি তো আর ফলো করলো না, তাই তিনি দেখিয়ে দিলেন এমন একজনকে যিনি সেই লিগাসিটি ফলো করছেন- “রাসূলুল্লাহ”

সূরা কাওসার হচ্ছে রাসূলুল্লাহ কে নিয়ে এবং এখানে তিনি রাসূলকে আদেশ করেছেন:

“নামাজ পড়ো এবং কুরবানী দাও” (নামাজ ও কুরবানী যেন কার সুন্নাত?)

৫. সূরা কাফিরুন:

হজরত ইব্রাহিম কে ফলো করতে গিয়ে রাসূলুল্লাহকে

“তোমার ধর্ম তোমার কাছে আমার ধর্ম আমার কাছে”

বলে তার গোত্র ত্যাগ করতে হলো

গোত্রীয় সমাজে এই ত্যাগ বিষয়টা গাদ্দারির সমতুল্য এবং এর সমাধান একটাই, যুদ্ধ!

সো বেসিক্যালি সূরা কাফিরুন হলো “যুদ্ধ ঘোষণার এক নথিপত্র” যাকে ইংরেজিতে ডিক্লারেশন অফ ওয়ার বলা হয়

৬. সূরা নাসর:

যুদ্ধ মানেই জয় অথবা পরাজয়, তাইতো তিনি জয়ের ভভিষ্যৎও দিয়ে দিলেন

“যখন আল্লাহর সাহায্য আসবে ও তার সাথে বিজয়ও আসবে
তখন আপনি মানুষকে দলে দলে আল্লাহর দ্বীনে প্রবেশ করতে দেখবেন”

৭. সূরা লাহাব:

জয়! সে তো বহু দূর, মুসলমানদের অবস্থা, যায় যায় এর মদ্ধে জয় আসবে কি করে? তাই, জয়ের এক ছোট্ট স্বাদ টেস্ট করলেন ইসলামের কট্টর শত্রূ আবু লাহাবের পরাজয়ের মাধ্যমে

৮. সূরা ইখলাস:

অনেক বছর ধরে যোদ্ধ চললে যেটা হয়, মানুষ যুদ্ধ কেন করছে তার আসল উদ্দেশ্যটিই হারিয়ে ফেলে,

তাই আল্লাহ সূরা ইখলাসে এই যুদ্ধের আসল উদ্দেশ্যটি আবারো মনে করিয়ে দিলেন-

আসল উদ্দেশ্য “তাওহীদ”- “খোদা একজনই”

৯. সূরা ফালাক

তাওহীদ এস্টাব্লিশ হলো

কিন্তু আগেও নবী রাসূল এসেছিলেন, এবং তাদের মৃত্যুর পরপরই মানুষ তাদের শিক্ষা ভূলে যায়. সো এখন কি ভাবে এই তাওহীদ কে ধরে রাখা যায়?

তিনি লিস্ট করে দিলেন, বাহির ও ভিতর গত সব সম্ভাব্য ক্ষেত্র গুলো যা থেকে বিপদ আসতে পারে

প্ৰথমেই বহির্গত বিপদকে টার্গেট করলেন, তিনি দুআ শিখিয়ে দিলেন

“আমি আমার রবের কাছে আশ্রয় চাচ্ছি, গ্রন্থিতে ফুঁৎকার দিয়ে জাদুকারিনীদের অনিষ্ট থেকে এবং হিংসুকের অনিষ্ট থেকে যখন সে হিংসা করে ”

১০. সূরা নাস

তারপর ফাইনালি তিনি সে সব জিনিস থেকে বাঁচতে শিখিয়ে দিলেন
যা আমাদের কে ভিতর থেকে এটাক করে, যেমন ওয়াসওয়াসা বা মেন্টাল চেটার, তিনি আবারো দুআ শিখিয়ে দিলেন

“আমি আমার রবের কাছে আশ্রয় চাচ্ছি, তার কাছ থেকে যে মানুষের অন্তরে ওয়াসওয়াসা বা মেন্টাল চেটারের মাধ্যমে কুমন্ত্রণা দেয়..”

পেটার্নটি আমার কাছে অসাধারণ লেগেছে, জানি না অন্যের কি মত, আমি অন্তত এমনটাই ভাবতে পছন্দ করছি..

A miracle in Ayatul Kursi

আয়াতুল কুরসী মোটামোটি আমাদের সবারই মুখস্ত

কিন্তু কখনো কি খেয়াল করে দেখেছেন এর অর্থ গুলো কি ভাবে সাজানো আছে?

যদিও আয়াতুল কুরসী নিজে একটি মাত্র আয়াত, কিন্তু এই একটি আয়াতেই ৯টা ভিন্ন বাক্যাংশ আছে!

এবং প্রতিটি বাক্যাংশই যেন একটি নিখুঁত সুতোয় বুনো!

যেমন, আয়াতুল কুরসীর,

প্রথম এবং শেষ অংশে বলা

“আল্লাহর বড়ত্ব ঘোষণা”

দ্বিতীয় এবং শেষ থেকে দ্বিতীয় অংশে বলা

“আল্লাহর তন্দ্রা আসে না এমনকি ক্লান্তিও আসে না”

তৃতীয় এবং শেষ থেকে তৃতীয় অংশে বলা

“আসমান ও যমীনে যা আছে, সবই তাঁর”

চতুর্থ ওর শেষ থেকে চতুর্থ অংশে বলা

“তাঁর ইচ্ছা ছাড়া কেউ ওকালতি করতে পারবে না আবার
তার ইচ্ছা ছাড়া কোনো কিছুই তার অগোচর হয় না ”

এবং সব শেষে একদম মাঝখানে, পঞ্চম অংশে বলা

“তাঁর দৃষ্টির আগে কিংবা পরে যা আছে, সবই তাঁর জানা”

অবাক হয়ে ভাবছি, আগে থেকে লিখা না থাকলে কার পক্ষে এভাবে কথা বলা সম্ভব!

(বুঝার সুবিদার্থে কালার কোডেড রি পেটার্নটি দিয়ে দিলাম)

 

Ayatul Kursi

I love Geography!

ছোট বেলা থেকেই ভূগোল এর প্রতি তীব্র একটা ঝোক ছিল

বিশ্ব ভ্রম্মান্ড কি করে কাজ করছে, প্রশ্নটা বেশ খুব ভাবিয়ে তুলতো

যার উত্তর কিছুটা হলেও ভূগোলে খুঁজে পেতাম

কিন্তু ছোট বেলার সেই তথ্য গুলো যেন দিন দিন কেমন পাল্টে যাচ্ছে

পড়েছিলাম, সূর্য স্থির, পৃথিবীর মতো ঘুরে বেড়ায় না, এখন শুনছি তা ভুল

পড়েছিলাম পৃথিবী গোলাকার, এখন শুনছি তা ফ্লাট!

কোনটা সত্য কোনটা মিথ্যা পুরোইং যেন সময়ের সাথে আপেক্ষিক হয়ে উঠেছে

স্বস্তির কথা এই যে, এমন একটা বই খুঁজে পেয়েছি যা সময়ের সাথে পাল্টে যায় না, যা নিরন্তর, যা নিরাপেক্ষিক, যা ১০০% সঠিক তথ্য দেয়

তাতে পেলাম:

পৃথিবীটাকে উট পাখির ডিমের আদলে তৈরি করা হয়েছে [১]

চাদ ও সূর্য দুটোই নিজ কক্ষে ঘুরছে [২]

শুধু তাই না, আরো পেলাম:

পুরো ভ্রম্মান্ড দিন দিন আকারে বেড়েই চলছে [৩]

এক বিশাল ধামাকার মাধ্যমে যার সূচনা [৪]

যা প্রাথমিক ভাবে ধুয়াটে অবস্থায় ছিল [৫]

পেলাম:

চাদ এর কোনো নিজেস্ব আলো নেই এবং সে কেবল সূর্যের রোশনিকে ধার করে চলছে [৬]

তবে এই আলো একদিন আস্তে আস্তে নিস্তেজ হয়ে পরবে [৭]

আরো পেলাম:

পৃথিবীটা বিভিন্ন টুকরো টুকরো নিয়ে ভেসে আছে যা পাহাড় দ্বারা খিলি করা যাতে সে আমাদের নিয়ে দোল না খায় [৮]

এবং এর প্রাণীকুলকে পানি দ্বারা সৃষ্টি করা হয়েছে [৯]

এবং এই প্রাণীকুলকে বাঁচানোর জন্য ওজন লেয়ার দ্বারা নিরাপদ করা হয়েছে [১০]

তথ্য গুলো বিশ্বাস করতে বাধ্য আমি কারণ

এটা এমন একটা বই যাতে কোনো সন্দেহ নেই… [11]

বইটার নাম আর খুলে নায়ী বললাম…

 

I am a Teabag

teabags

আমি একটি টি-ব্যাগ!

জি ভাই, একটি প্রিমিয়াম কোয়ালিটি টি-ব্যাগ…

টি-বেগ দেখেছেন নিশ্চই?

বাজারে তো হরেক রকমের টিবেগই আছে, নানা জাতের, নানা লেবেলের, নানা ফ্লেভারের

সুন্দরের মোড়কের আড়ালে হলুদ, সবুজ লেবেল যাই হোক না কেন, তার মূল্যায়ন কিন্তু হয় তার ভিতরের কোয়ালিটির উপর..

আর এই কুয়ালিটি একমাত্র গরম সিচুয়েশনেই প্রকাশ পায়….

আমি জানি বা না জানি, আমার মেনুফেস্টুরার কিন্তু আমার কোয়ালিটি সম্পর্কে অবগত..

তাইতো তিনিঁ বারবার আমাকে এরকম সিচুয়েশনে ফেলে দিয়ে আমার প্রিমিয়াম কোয়ালিটিটি বের করে আনার চেষ্টা করছেন…

কখনও কি মোড়কের গায়ে পড়ে দেখেছেন কি লিখা আছে?

লিখা আছে:

“আমি অবশ্যই তোমাদেরকে ভয়, ক্ষুধা, মাল ও জানের ক্ষতি ও ফল-ফসল বিনষ্টের মাধ্যমে পরীক্ষা করব। তবে সবরকারীদের সুসংবাদ দাও ” [কোরান ২:১৫৫]

“নিশ্চয় আল্লাহ তাদের সাথে আছেন যারা অন্যের সেবায় নিয়োজিত [কোরান ২৯.৬৯]”

মগের উপরি ভাগে থাকি বা তলদেশে থাকি তা বিষয় নয়, অন্যের সেবাই আমার ব্রত

তেমনি, ধর্মে বা কর্মে যে লেভেলেই থাকি না কেন সেবাই আমার ব্রত…

এটাই আমার সার্থকতা

সো নেক্সট টাইম,

কেউ উপরে গরম পানি ঢেলে দিক অথবা গরম পানিতে ছেড়ে দিক

ধৈর্য ধরুন আর বলে উঠুন

“আমি একটা টি বেগ, সেবাই আমার ব্রত, এখানেই আমার সার্থকতা…”